শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাকুন্দিয়ায় ছাত্রলীগের হামলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতা গুরুতর আহত

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ১০ জুন ২০২৩, ১৪:৪৬

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পদ বঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে গুরুতর আহত করেছে।

শুক্রবার (৯ জুন) রাত ৮টার দিকে পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের ভূইয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়েছে দেলোয়ার হোসেন (রফিকুল মেম্বার) উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, আরেকজন সুমন সরকার বুরুদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। দু’জনকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ভিপি ফরিদ উদ্দিন বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কিশোরগঞ্জে আগমন উপলক্ষে পাটুয়াভাঙ্গার দরগাহ বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিনের বাসায় প্রস্তুতি সভা ছিল। সভা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে পাটুয়াভাঙ্গা ভূইয়া বাজারের পরে তাদের সিএনজিচালিত অটোরিকশার পথ রোধ করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য নুর মোহাম্মদের অনুসারীরা হামলা চালান।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক এখলাস উদ্দিন, বর্তমান উপজেলা ছাত্র লীগের কমিটি থেকে পদত্যাগ করে দুধ দিয়ে গোসল করে ভাইরাল হওয়া সহ-সভাপতি আরমিন মিয়া, ছাত্রলীগ নেতা পাপ্পু ও সাকিবুল হাসান মুন্নার নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। হামলায় হোসেন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বুরুদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন সরকার গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখান থেকে তাদেরকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করা হয়নি। তবে মামলা দায়ের হবে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে ২২ মে বিকেলে পাকুন্দিয়া পৌর সদর বাজারের মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় এলাকায় উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলামের ওপর হামলা চালিয়ে তার পা ভেঙে দেয়া হয়েছে। এ সময় আলফাজ নামের আরও একজন আহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় জেলা পরিষদের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম ভিপি শফিককে ১ নাম্বার আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা আরমিন আহমেদ বলেন, ‘গতকালকে (শুক্রবার) আমরা এমপি নূর মোহাম্মদ স্যারের কটিয়াদীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফেরার পথে বুরুদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে পৌরসভার মেয়রকে নিয়ে বসেছিলাম। পরে বাড়িতে এসে আর বাহিরই হয়নি। তাইলে কই মারলাম আর কই কি করলাম। আমাদের তো রাতে পাকুন্দিয়া বাজার ছেড়ে যাওয়াই নিষেধ। কারণ রাতের আধাঁরে আমাকেই মির্জাপুর বাইপাসে স্টেপ করা হয়েছিল। আমাদেরও তো ভয় আছে যেহেতু উল্টাপাল্টা সংঘর্ষ চলতেছে। তাই আমরা রাতে কোনো জায়গায় যায়নি। যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা।’

সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন ও বর্তমান সংসদ সদস্য নুর মোহাম্মদ গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছেন তারা। উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আরমিন আহামেদ আগে সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিনের পক্ষে রাজনীতি করলেও ছাত্রলীগের কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে দুধ দিয়ে গোসল করে এলাকায় আলোচনায় আসেন। পরে পাপ্পু, আরমিন, ফরিদ উদ্দিনসহ শতাধিক পদ বঞ্চিত ছাত্র লীগের নেতা কর্মীরা বর্তমান এমপি নুর মোহাম্মদের গ্রুপে যোগ দেন তিনি।

এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ হাসনা সুমন বলেন, এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে