তোমরা কহেন তো বাহে, হামরাগুলা পুরুষের সাথে সমান তালে কাজ করি। কিন্তু মুজরি পাই ৩শ’ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা আর পুরুষ মানুষগুলো পায় ৫শ’ টাকা। হামরা কি ওমারগুলের থাকি কম কাম করি? ওরাও আইসে বিহানে, হামরাগুলোও আসি বিহানে। তাহলে ওরা এত বেশি পায় কেন? বুধবার কাজ করার সময় আবেগে কথাগুলো বলছিলেন, দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার তাঁরগাঁও ইউনিয়নের হাটিয়ারী গ্রামের ঊষা রানী রায়, দ্বিপালী রানী রায়সহ অন্যান্য নারী দিনমজুরা। উপজেলায় কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করা অধিকাংশ নারীরই মজুরি নিয়ে ঊষা রানী মতো এমন আবেগ রয়েছে অন্য দিন মজুরদেরও।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠে কাজ করার ক্ষেত্রে নারী দিনমজুর চাহিদা বেশি থাকলেও তারা ন্যায্য মুজরি পাচ্ছেন না বলে অনেকেই জানিয়েছেন। বর্তমানে উপজেলার গ্রামগঞ্জে বিভিন্ন মাঠে শত শত নারী দিনমজুর দৈনিক মুজরির ভিত্তিতে কাজ করছেন। পুরুষ দিনমজুর যেখানে সারাদিন অন্যের বাড়িতে কাজ করে মুজুরী পায় ৫শত টাকা থেকে ৬শ’ টাকা আর নারী দিনমজুর দিনে অন্যের কাজ করে পায় ৩শ’ টাকা থেকে ৩৫০শ’ টাকার মতো।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে একাধিক নারী দিন মজুরের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পুরুষ দিন মুজরির তুলনায় নারী দিন মুজুররা বেশি কাজ করেও তারা মুজরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন সেটা মেনে নিয়ে জীবিকার তাগিদে কাজ করে খেতে হচ্ছে তাদের।
ঘরের কাজ সেরে বাহিরে শ্রম দেওয়ায় শরিক হচ্ছেন তারা রসুলপুর ইউনিয়নের সাধুর বাজার এলাকার কৃষি শ্রমিক রানী বালা ও হৈমন্তী রানী রায় বলেন, পুরুষেরা মালিকের বাড়িতে একবেলা খেয়েও ৫শ’ টাকা থেকে ৬শ’ টাকার মতো মুজরি পায়। অন্যদিকে দিনমুজুর নারীরা সমান কাজ করেও নিজের বাড়িতে খেয়ে-দেয়ে মুজরি পায় অর্ধেক। এই আয় দিয়ে সন্তানদের নিয়ে সংসার চালা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এখন বাজারে জিনিসপত্রের যে দাম তাতে খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. আফসানা মোস্তারী বলেন, আমরা নারীদের অধিকারের কথা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তুলে ধরে আসছি। আমরা সর্বস্তরের মানুষ যদি এক হয়ে কাজ করি তাহলে নারীদের বৈষম্য দূর করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
যাযাদি/ এসএম