সারাদেশ

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর এলাকায় জুঁই খাতুন (২২) কে হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবীতে উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন শেষে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক প্রায় ৩ ঘন্টাব্যাপী অবরোধ করেন এলাকাবাসী।

গত ৩০ জানুয়ারী রাত সাড়ে ৭ টার সময় উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর এলাকায় জুই খাতুন নামে এক গৃহবধুকে স্বামী কর্তৃক হত্যা করা হয়।

এর থানায় মামলা নথিভুক্ত ও আসামীকে গ্রেফতারের দাবীতে এলাকাবাসী মানববন্ধন শেষে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করেন।

ঘটনাসুত্রে জানাযায়, ৩ বছর পূর্বে একই উপজেলার সিংগিমারী ইউনিয়নের জাহেদুল ইসলামের মেয়ে জুঁই খাতুনের সাথে সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজশেখ সুন্দর গ্রামের মমিকুল ইসলামের ছেলে আলী হোসেনের সাথে বিবাহ হয়। সংসার চলাকালীন সময়ে জুই খাতুনের সাথে তার স্বামী আলী হোসেনের বিভিন্ন সময় পারিবারিক বিষয় নিয়ে কলহ চলে।

এরই মধ্যে গত ৩০ জানুয়ারী বিকেলে যৌতুকের টাকা দাবী করে আলী হোসেন তার স্ত্রীর সাথে কথাকাটাকাটি হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় ৭.৩০ মিনিটে জুই খাতুনের স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে মৃত্যুর সংবাদ আসে।

তবে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয় জুঁই এর স্বামী দীর্ঘদিন ধরে ক্যাসিনো জুয়া এবং মাদকাসক্ত হয়ে বিভিন্ন সময় বাড়িতে যায়। এগুলোর প্রতিবাদ করলে জুঁই খাতুনকে সাথে সব সময় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকে। একপর্যায়ে জুয়া খেলার জন্য টাকা প্রয়োজন হলে জুই খাতুন কে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। টাকা আনতে না পারায় জুই খাতুনকে মারধর করে। পরে বালিস চাপা দিয়ে জুইকে মেরে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। এটা আত্মহত্যা না জুইকে হত্যা করা হয়েছে।

ওইদিন মরদেহ হাতীবান্ধা থানা পুলিশ উদ্ধার করে একটি ইউডি মামলা রুজু করে পোস্টমর্টেম করার জন্য লালমনিরহাট সিভিল সার্জন অফিসে পাঠায়। কিন্তু জুঁই খাতুনের পরিবারের বলছেন পরিবারকে না জানিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ইউডি মামলা করা হয়েছে। যা হত্যাকারী সহায়তার সামিল। ওই ইউডি মামলা বাতিল ও হত্যাকারীকে গ্রেফতারের দাবীতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের মানবন্ধন শেষে মহাসড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। জুঁই খাতুনের মা লিপি বেগম বলেন, আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।

এদিকে অবরোধকারী নুরুল ইসলাম বলেন, জুঁই খাতুন আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করেছেন স্বামী আলী হেসেন এবং সেই সাথে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে সন্দেহ পোষন করেন ।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম মিয়া বলেন, রাস্তা অবরোধ দেখে আমি ও ওসি তদন্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনা শুনে মামলা নেয়া ও আসামীকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধকারীরা অবরোধ তুলে নেন।

যাযাদি/ এমএস