সড়ক দুর্ঘটনায় মার্মান্তিকভাবে নিহত সাংবাদিক পিতার মরদেহ বাড়ীর আঙিনায় রেখে শোকার্ত কলেজছাত্রী মেয়ে ডিগ্রি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বরগুনার বামনায় বামনা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য স্নাতক পরীক্ষায় গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয় পিতৃহারা মনিষা রানী বিশ্বাস। পরীক্ষা শেষে আজ বৃহস্পতিবার স্বজনদের সাথে পরিবারিক সমাধিতে নিহত বাবা সাংবাদিক নির্ঝর কান্তি বিশ্বাস ননী(৫৩)কে সমাহিত করে।
নিহত নির্ঝর কান্তি বিশ্বাস ননী বামনা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি ও দৈনিক খোলাকাগজ পত্রিকার বামনা উপজেলা প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার বিকাল ৪ ঘটিকায় দিকে বাড়ি থেকে মটরসাইকেল যোগে উপজেলা সদরে আসার পথে কলেজ রোডস্থ ভেন্ডার বাড়ী নামক স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের সাথে মুখোমুখী সংঘর্ষ ঘটে। এসময় তার মটরসাইকেলটি দুমড়ে মুচড়ে যায়।
দুর্ঘটনায় মাথা ও পায়ে মারাত্মকভাবে জখম হয়ে সাংবাদিক নির্ঝর কান্তি বিশ্বাস ননী গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকায় ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট ও নিউরোসাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এমন অবস্থায় নিহত সাংবাদিকের বড় মেয়ে বামনা বেগম ফায়জুন্নেসা মহিলা ডিগ্রি কলেজের স্নাতক পরীক্ষার্থী মনিষা রানী বিশ্বাস পিতার মরদেহ বাড়ীর উঠানে রেখে পরীক্ষায় অংশ নেয়।
এ ব্যাপারে বামনা প্রেসক্লাব সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। নিহত সাংবাদিক পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বাবাকে হারিয়ে এখন অসহায় অবস্থায় পরেছে।
নিহত সাংবাদিকের স্ত্রী সুবর্না বিশ্বাস স্বামীকে হারিয়ে এখন পাগল প্রায়। স্বামীর মরদেহের পাশে বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, স্বামীকে হারিয়ে এখন চরম অসহায় অবস্থার মধ্যে পরেছি। দুই মেয়ের লেখাপড়া কিভাবে চলবে তা জানিনা।
এ ব্যপারে বেগম ফায়জুন্নেসা মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মনিষা বিশ্বাস আমার কলেজ থেকে এবছর স্নাতক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বাবার অকাল মৃত্যুতে তার পরীক্ষায় অংশ গ্রহন থেমে নেই। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা শোকাহত।
যাযাদি/ এমএস