পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে এবার বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান কৃষকেরা। কচা নদীর তীরবর্তী উপজেলার বালিপাড়া, চণ্ডীপুর, ঢেপসাবুনিয়া, মাঝেরচর, পত্তাশী ও চরনী পত্তাশী গ্রামে মাঠজুড়ে শুধু বাঙ্গির ক্ষেত।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাঙ্গি চাষ লাভজনক হওয়ায় তারা এতে আগ্রহী হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে বেশি বাঙ্গি চাষ হয়েছে।
রোববার বিকেলে উপজেলার ঢেপসাবুনিয়া ও মাঝেরচরের বালিপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা নিজ নিজ বাঙ্গির ক্ষেতে ব্যস্ত। কেউ বিক্রির জন্য ক্ষেত থেকে বাঙ্গি তুলছেন, কেউ আবার গাছে পানি দিচ্ছেন।
বাঙ্গি চাষি মাহমুদ হোসেন জানান, ৯ জন মিলে এবার ১৫ বিঘা জমিতে বাঙ্গি ও তরমুজ চাষ করেছেন। এতে তাদের প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। গত বছর একই পরিমাণ জমির বাঙ্গি ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। এবার ১২ হাজার মাদায় (প্রতি মাদায় চারটি করে চারা) ৪৮ হাজার চারা লাগিয়েছেন।
রমজান মাসের কারণে ও ভালো দাম থাকায় এবার ২২ লাখ টাকার বেশি বিক্রির আশা করছেন।
ফাইজুল্লাহ জানান, আগে যে বাঙ্গি ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো, রমজান মাসের কারণে এবার তা ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এমন দাম থাকলে এবার ভালো মুনাফা হবে।
বগুড়া থেকে বাঙ্গি কিনতে আসা বেপারি আবদুল কুদ্দুস ও ছগির জানান, ইন্দুরকানী অঞ্চলের বাঙ্গির মান ভালো। তাই তারা এখানে বাঙ্গি কিনতে এসেছেন। ব্যবসায়ী মিজান বেপারি জানান, তিনি ক্ষেত থেকে ৮০-৮৫ টাকা দরে প্রতিটি বাঙ্গি কিনছেন। ক্ষেত থেকে গাড়িতে তুলতে ও ঢাকায় পৌঁছাতে প্রতিটি বাঙ্গিতে প্রায় ১৩-১৪ টাকা খরচ হচ্ছে। এতে ভালো লাভও হচ্ছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. ইব্রাহিম সর্দার জানান, ইন্দুরকানির মাটি বাঙ্গি চাষের উপযোগী। গত বছর এখানে ৬৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হলেও এ বছর ১০৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি এবং ১০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। ফলন ভালো ও লাভ বেশি হওয়ায় চাষিরা বাঙ্গি ও তরমুজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এতে যেমন স্থানীয় চাহিদা পূরণ হচ্ছে, তেমনি বিভিন্ন জেলায়ও সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে, ফলে কৃষকরা ভালো লাভ পাচ্ছেন।
তিনি আরও আশাবাদী যে, আগামীতে উপজেলায় আরও বেশি জমিতে এসব ফসলের আবাদ হবে।
যাযাদি/ এসএম