আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে গুরুতর রোগীদের জন্য চিকিৎসাসেবা সহায়ক ট্রলি ও হুইল চেয়ার না থাকায় আগত সেবা গ্রহিতাদেরকে নিয়ে বিরাম্ভনার পোহাতে হয়।
জরুরি বিভাগে ট্রলী না পেয়ে রোগীদের স্বজনরা রোগীদের কোলে নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ ও বাহির হতে দেখা যায়। অথচ উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি সরকারী হাসপাতালেই ট্রলি ও হুইল চেয়ার থাকার কথা। আর না থাকলেও জরুরী চাহিদা পাঠালে স্বল্প সময়ের মধ্যে এগুলো হাসপাতালে সরবরাহ হওয়ার কথা।
গত কয়েকদিন পূর্বে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌর এলাকার মহি উদ্দিন মিয়ার আম্মা গুরুতর অসুস্থ হলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। হাসপাতালে আসার পর কোন ট্রলি বা হুইল চেয়ার না পেয়ে কযেকজন মিলে তাকে কোলে করে জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ভর্তি দেয়ার পর জরুরী বিভাগ থেকে আবারও কয়েকজন মিলে তাকে কোলে করে ধরে দ্বিতীয় তলায় ওয়ার্ডে নিয়ে যায়। পরদিন ভোর সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রেফার করলে একই পদ্ধতিতে নিচে নামিয়ে গাড়িতে তোলা হয়। হাসপাতালে প্রতিদিনই কোলে করে রোগীকে আনা নেয়ারদৃশ্য চোখে পরে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের এক কর্মচারী জানান, জরুরী বিভাগের সামনে একটি ট্রলি আছে। কিন্তু অপর এক কর্মচারী ট্রলি নেই বলে জানান। সরেজমিনে গিয়ে ট্রলির কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালে আগত মহি উদ্দিন বলেন, গত কয়েকদিন পূর্বে তাঁর মা অসুস্থ হলে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই সেখানে কোন ট্রলি বা হুইল চেয়ার না তাকায় কোলে করেই জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর মাকে ভর্তি করেন। তাঁরপর জরুরী বিভাগ থেকে কোলে নিয়েই দ্বিতীয় তলায় কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে অবস্থা অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে রেফার করলে আবারও কয়েকজন মিলে কোলে করেই হাসপাতাল থেকে বের করতে হয়েছে।
হাসপাতালে থাকা রোগীদের স্বজনদের সাথে আলাপকালে তাঁরা বলেন, এই হাসপাতালে ট্রলি ও হুইল চেয়ার নেই। এটা খুবই দুঃখজনক। এছাড়াও তাঁরা আরো বলেন, হাসপাতালের কেবিনে যদি কোন রোগী মারা যায় তাহলে ট্রলি ছাড়া নিচে নামানো খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।
এবিষয়ে আরও কয়েক জনের সাথে কথা বললে তারা জানান, এই হাসপাতালে সবসময়ই চিকিৎসা সেবা নিতে আসলে বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হয়। এর জন্য তারা হাসপাতালের দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতাকেই দায়ী করেন। অনেক সময় চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে জেলাসদরসহ বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, হাসপাতালে ট্রলী ও হুইল চেয়ার না থাকার কোন অবকাশ নাই। তবে ব্যবহারের জায়গা কমতি-ঘাটতি তাকলে সেটা আমি দেখবাল করবো। জরুরী ভাবে পদক্ষেপ নিয়ে জরুরী বিভাগের সামনে রাখা হবে যার প্রয়োজন ব্যবহার করবে।
যাযাদি/ এসএম