বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

রায়পুরে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৫

রায়পুর (লক্ষীপুর) প্রতিনিধি
  ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৩
রায়পুরে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৫
ফাইল ছবি

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন একজন, আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।

সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট বাজার এলাকায় এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তি হলেন ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হানিফ দেওয়ানের ছোট ভাই, ফ্রান্সফেরত প্রবাসী সাইজ উদ্দিন দেওয়ান (৩৮)।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে জালাল মাঝি, নাজিম হোসেন, নজরুল কবিরাজ, সুপিয়ান বেপারী, সাইফুল, সাত্তার কবিরাজসহ চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি আহতরা রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার পর খাসেরহাট এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। আতঙ্কে অনেক বাসিন্দা এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ঘটনাস্থলে।

স্থানীয় সূত্র ও দলীয় নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজ ও উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব শামীম গাজীর মধ্যে স্থানীয় আধিপত্য, মাছঘাট, মেঘনার চর এবং কাঁচাবাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরই জের ধরে সোমবার সকাল থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।

বিকেলে ফারুক কবিরাজের ভাই মেহেদী কবিরাজের নেতৃত্বে একদল লোক শামীম গাজীর সমর্থক সাইজ উদ্দিন ও আবু খানকে খাসেরহাট বাজারের নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধর ও কুপিয়ে আহত করে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা সাইজ উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. কমলাশীষ রায় বলেন, “সাইজ উদ্দিনকে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান। তাঁর শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত ছিল। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।”

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, “দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে এ সংঘর্ষ ঘটে। এখন পর্যন্ত একজন নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ১৫ জন আহত বলে খবর পেয়েছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সালেহ আহমেদ বলেন, ‘গত ২১ ডিসেম্বর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সব কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। তারপরও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও বিরোধ রয়ে গেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা মর্মাহত। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা না হলেও তদন্ত ও নজরদারি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে