ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নে দাখিল পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ওমর কাজীর ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ থেকে ওমরকে গ্রেফতারের জন্য ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।
রোববার বিকালে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বোরহানউদ্দিন ছাত্রকল্যাণ ফাউন্ডেশন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নের খাসমহল বাজারে বিকেল ৫ টায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে।
ছাত্রকল্যাণ ফাউন্ডেশনের কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে হাসাননগর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসার ছাত্র স্থানীয় জনতা,আলেম সমাজ সহ সর্বস্তরের জনগণ ওই বিক্ষোভ-মিছিল কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, ধর্ষক ওমর কাজী ও তার সহযোগীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। দেশে এত ধর্ষণ হচ্ছে কিন্তু অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না। পুলিশ কি করে? প্রশ্ন তুলে বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে ধর্ষক এবং তার সাথে সহযোগীদের গ্রেপ্তার করে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক। তা না হলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে।
আলটিমেটাম দিয়ে তারা বলেন, ২৪ ঘণ্টার ভেতরে ধর্ষক ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা না হলে কঠোর কর্মসূচি এমনকি বোরহানউদ্দিন থানা ঘেরাও করার হুশিয়ারী দেন।
জানা যায়, শুক্রবার(১১ এপ্রিল) রাত এগারোটার দিকে হাসাননগর ইউনিয়নের ৬ নাম্বার ওয়ার্ডে ভুক্তভোগীর নিজ ঘরের পাশে ওই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী দাখিল পরীক্ষার্থী জানান,‘আমার দাখিল পরীক্ষা একটা শেষ হয়েছে বাকি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। রাত ১১ টার দিকে ঘরের পাশে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে টয়লেটে গেলে আগ থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষক ওমর কাজী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুখ চেপে বাগানের ভিতরের দিকে নিলে চিৎকার করলে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধর্ষণ করে।’ ভুক্তভোগীর মা অভিযোগে জানান, ‘ধর্ষণের শিকার হয়ে ঘরে এসে আমার মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। রাতেই এ ঘটনা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানাতে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে আমাকেও (মা'কে) গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যাচেষ্টা করে। পরে চিৎকার চেঁচামেচির এক পর্যায় ধর্ষক ওমর কাজীকে স্থানীয় বাসিন্দারা আটক করলে সে কৌশলে সটকে পড়ে।’
অসুস্থ শিক্ষার্থীকে তাৎক্ষণিক বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
ভোলা সদর হাসপাতালের ডা. তায়েবুর রহমান জানান, ‘আমরা যথাযথ চিকিৎসা দিচ্ছি। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ করে বিস্তারিত বলা যাবে। তবে রোগীর অবস্থা এখন আশংকা মুক্ত।’
বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান জানান, পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। মামলা হয়েছে, আসামি গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলমান।