দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যার। ১০ জন চিকিৎসকের চাহিদার বিপরীতে সেখানে চিকিৎসক আছেন মাত্র দুই জন। চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ উপজেলার মানুষ। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিকিৎসকের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তিন ইউনিয়ন ও এক পৌরসভা নিয়ে গঠিত হাকিমপুর (হিলি) উপজেলায় চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র একটিই— উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রতিদিন এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন ৪০০ থেকে ৫০০ জন এবং জরুরি বিভাগে আসেন ১০০ থেকে ১৫০ জন। চিকিৎসাধীন থাকেন ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী। দীর্ঘদিন ধরে এসব রোগীকে সেবা দিচ্ছেন মাত্র দুই জন মেডিকেল অফিসার।
বর্তমানে আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে সর্দি, জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষ। তারা চিকিৎসাসেবা নিতে ভিড় করছেন হাসপাতালে। তাদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দুই চিকিৎসক। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক বাড়াবে সরকার, এ প্রত্যাশা রোগী ও তাদের স্বজনদের।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা জহিরুল ইসলাম বলেছেন, গতকাল আমি আমার রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। বর্তমান রোগীর অবস্থা ভালো। ডাক্তার মাঝে-মধ্যে আসছেন, রোগী দেখে যাচ্ছেন। তবে, সব জায়গায় দেখছি এক জন ডাক্তারকে। আমাদের হাসপাতাল অনেক দিন ধরেই দুই জন ডাক্তার দিয়ে চলছে। আমি সরকারের কাছে আহ্বান জানাব, দ্রুত এই হাসপাতালে ডাক্তার বাড়ানো হবে।
হাসপাতালের স্টোরকিপার শাহিনুজ্জামান বলেছেন, আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ এবং অন্যান্য সামগ্রী আছে। কিন্তু, যতগুলো ডাক্তার থাকার কথা, তা নেই। ডাক্তার কম থাকায় জনগণকে সঠিক সেবা দেওয়া যাচ্ছে না।
নার্সিং সুপারভাইজার নুর নেহার বেগম বলেছেন, হাসপাতালে নার্সের কমতি নেই। তবে, মাত্র দুই জন চিকিৎসক আছেন। এত বড় হাসপাতালে দুই জন চিকিৎসক দিয়ে সেবা দেওয়া সম্ভব না। চিকিৎসক বাড়ানো প্রয়োজন।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. হুমায়ুন কবির বলেছেন, ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক প্রয়োজন ১০ জন। তার মধ্যে আছি মাত্র দুই জন। বর্তমানে আমরা রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। আউটডোর, ইনডোর এবং ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে প্রতিনিয়ত দৌড়-ঝাঁপ করতে হচ্ছে। চিকিৎসক সংকটে এ উপজেলার মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”
হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইলতুতমিশ আকন্দ পিন্টু বলেছেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট আছে। দীর্ঘদিন ধরে দুই জন চিকিৎসক দ্বারা সেবা দিয়ে আসছি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিকিৎসকের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ড. মো. আসিফ ফেরদৌস বলেন, শুধু হিলি হাসপাতালে নই, সারা বাংলাদেশের প্রায় সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সঙ্কট রয়েছে। নতুন বিসিএস নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থা থাকবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সঙ্গে সমন্বয় করে ডাক্তার পদায়ন করছে। হয়তো হিলি হাসপাতালের জন্য বিষয়টি দেখা হবে।
যাযাদি/ এসএম