জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও কবিপত্নী প্রমিলা দেবীর স্মৃতি বিজড়িত মানিকগঞ্জের শিবালয়ের তেওতা জমিদার বাড়ির রাস্তার বেহাল দশায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
শিবালয়ের ঐতিহ্যবাহী আরিচা থেকে তেওতা জমিদার বাড়ি এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এ রাস্তা অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ হলেও দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না হওয়া, ভারী যানবাহন চলাচল ও বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় এমন বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। এছাড়া, রাস্তাটি সরু হওয়ায় রিক্সা, মোটরসাইকেল ও পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সময়মত সংস্কার না করায় রাস্তার এমন অবস্থা নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে, স্থানীয় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলজিইডি বিভাগের অধীনস্থ ব্যস্ত এ সড়ক মেরামতের কোন উদ্যোগ নেই বলে স্থানীযরা অভিযোগ করেন। অতিদ্রæত এ রাস্তা সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিন ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আরিচা ৩নং ফেরি ঘাট এলাকা থেকে শুরু করে নিহালপুর-সমেজঘর হয়ে তেওতা জমিদার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া, কিছু জায়গায় রাস্তার দু’পাশে বিভিন্ন যায়গা খসে পড়েছে। এতে, রাস্তা আরো বেশি সরু হয়ে গেছে। রাস্তার মধ্যে ছোট-বড় বহু গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টি হলে এসব গর্ত পানি দিয়ে কানায়-কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। রাস্তায় পানি ও কাঁদা জমে থাকায় পথচারিদের হাঁটাসহ রিক্সা ও ছোট-বড় গাড়ি চলাচল করতে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এতে, মাঝেমধ্যেই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এছাড়া, বহু দূর থেকে ঐতিহ্যবাহী তেওতা জমিদার বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই পর্যটকরা ঘুরতে আসেন। এ সড়কে প্রতিদিন বহু রিক্সা-ভ্যান, ছোট গাডি, প্রাইভেট কার, অটো রিক্সা, সিএনজি চলাচল করে। আর বিশেষ কোন দিন থাকলে তো এ রাস্তায় তিল ধরার জায়গাও যেন থাকে না। এ সময় এ রাস্তায় ৩/৪ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়রা আরো বলেন, রাস্তার বেহাল দশার কারণে কৃষকদের ফসলি মাঠের উৎপাদিত ফসল হাট-বাজারে আনা-নেয়া করতে সমস্যা হচ্ছে। আর গাড়ি চালকদেরকে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। যানবাহনে অর্ধেক লোড নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তা ভাঙ্গা থাকায় অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার সময় ঝাঁকিতে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
এদিকে, তেওতা জমিদার বাড়ি এলাকায় পর্যটন শিল্প গড়ে তুলতে উপজেলা প্রশাসন নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে। ফলে, আরো বেশি পর্যটকের পদচারণা সৃষ্টি হবে। তাই এ রাস্তায় ভবিষতে আরো বেশি যানবাহন চলাচল করবে বলে সচেতন মহল জানিয়েছেন।
শিবালয় উপজেলা উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, তেওতা জমিদার বাড়ির রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলে দ্রুত সংস্কার কাজ করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ ব্যাপারে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি সংস্কারের জন্য অতিদ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।