দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে দশম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে নিয়ে উধাও হয়েছেন উপজেলার একরামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার রবিউল আলম নামে এক মৌলভী শিক্ষক। এ ঘটনায় ওই লম্পট শিক্ষককের অপসারনের দাবীতে মানব বন্ধন করেছে মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ।
রোববার সকলে খাজাপুর একরামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার প্রধান ফটকে তারা এ মানব বন্ধন করেন।
মানব বন্ধনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ বলেন মাদ্রাসার ছেলে-মেয়েদের তারা শিক্ষার জন্য পাঠান, সেখানে শিক্ষকগণ শিক্ষাদানের পাশাপাশি চরিত্রগঠন করাবেন, কিন্তু সেই শিক্ষক যদি চরিত্রহীন হয়ে ছাত্রীদের চরিত্র নষ্ট করে, ছাত্রীরা যদি শিক্ষককের নিকট নিরাপদ না থাকে, তাহলে তারা এ মাদ্রাসায় আর কোন ছেলে-মেয়েকে পাঠাবেননা, এ কারনে চরিত্রীহীন লম্পট শিক্ষক রবিউল আলমের অপসারনের দাবী জানান।
মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন অভিভাবক আনিছুর রহমান, অভিভাবক ও খাজাপুর জামে মসজিদের ইমাম আশরাফুল ইসলম, সামসুল আলম, আব্দুস সালাম, কাওছার আলী, ফয়সাল মাহমুদসহ অনেক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীগণ।
মাদ্রাসা সুত্রে জানা গেছে আওয়ামী লীগের সদ্য প্রায়াত সাবেক এমপি ও মন্ত্রী এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমানের আস্থাভাজন হওয়ায়, তারই হস্তক্ষেপে ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর সহকারী মৌলভী শিক্ষক হিসেবে খাজাপুর একরামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যোগদান করেন। এরপর থেকে একের পর এক নারী ঘটিত ঘটনা ঘটাতে থাকে ওই লম্পট শিক্ষক রবিউল আলম। সেই সময় আওয়ামীলীগের ক্ষমতার দাপটে ওই ঘটনাগুলো ধামাচাপা দিয়ে আসচ্ছে, এরপর চলতি সনের গত ২৫ ফেব্রয়ারি ওই মাদ্রাসার এক দশম শ্রেনীর ছাত্রীকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তাকে নিয়ে উধাও হয় ওই লম্পট শিক্ষক রবিউল আলম।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতার অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩মার্চ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু ওই লম্পট শিক্ষক রবিউল আলমকে চুড়ান্ত ভাবে বহিস্কারের দাবীতে আন্দোলনে নেমেছে মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকগণ। মানব বন্ধনে শতশত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ অংশ নিয়ে ওই লম্পট শিক্ষক রবিউল আলমের অপসারনের দাবী জানান।
ছাত্রীকে নিয়ে উধাও হওয়া শিক্ষক রবিউল আলম ফুলবাড়ী উপজেলার কাজিহাল গ্রামের মৃত আমিনুল ইসলাম মাষ্টারের ছেলে, তার প্রতিবেশিরা জানায় রবিউল আলম একজন লম্পট চরিত্রহীন, তার একাধিক নারী কেলেংকারীর দায়ে ইতোমধ্যে তার দুই স্ত্রীর সাথে সংসার ভেঙ্গেছে, তাদের ঘরে দুটি সন্তানও রয়েছে। প্রতিবেশিরা জানায় প্রথম স্ত্রীর পিতার বাড়ী ছিল উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের জামগ্রামে, তার ঘরে একটি সন্তান রয়েছে, তাকে রেখে আবারো বিয়ে করে নবাবগঞ্জ উপজেলায়, সেই সংসারও ভেঙ্গেছে, শুধু তার চরিত্রীহীনতার কারনে।
এদিকে খোজ নিয়ে জানা গেছে এ ঘটনার পর থেকে গাঁ ঢাঁকা দিয়েছে ওই মৌলভী শিক্ষক রবিউল আলম। সেই সময় থেকে সে মাদ্রসায় আসেনি, তাকে কয়েক দফা ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি এবং বাড়ীতে গিয়েও তার দেখা মেলেনি।
এদিকে ওই ছাত্রীর অভিভাবকগণ জানান ওই লম্পট শিক্ষকের বিরুদ্ধে তারা ইতোমধ্যে অপহরন ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন যা বিচারাধীন রয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে খাজাপুর একরামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফিজ মাহবুব রহমান বলেন, রবিউল আলম শিক্ষক পেশাকে কলংকিত করেছে, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে, এরপর আইন অনুযায়ী চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে।