বাংলাদেশের চালিকা শক্তি কৃষিকে বলা হয়। আর কৃষিতে আরও সমৃদ্ধ করতে (প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এন্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ইন নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনারশিপ এন্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) প্রকল্পটি কৃষিকে আরও আধুনিক ও এগিয়ে নিয়ে যেতে দেশের প্রতিটি উপজেলায় চালাচ্ছে কৃষকদের হাতে কলমে শিখানো হচ্ছে ফসল লাগানোর থেকে শুরু করে ফসল কর্তন পর্যন্ত ।
বাদ পড়েনি কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা গুলোও এ প্রকল্পের কার্যক্রমের কৃষিতে বেশ আগ্রহ যোগাচ্ছে কৃষকদের মাঝে বলে জানিয়েছে একাধিক কৃষক। প্রতিটি উপজেলায় রয়েছে ইউনিয়নে পার্টনার প্রকল্পে কৃষক কৃষানীদের জন্য কৃষিভিত্তিক পার্টনার ফিল্ড স্কুল। এই স্কুলের মাধ্যমে প্রতিটা কৃষক-কৃষানীদের তাদের জমিতে ফসল তৈরি শুরু করে শেষ পর্যন্ত ক্লাসের মাধ্যমে তাদেরকে শিখানো হয়ে থাকে। কিশোরগঞ্জের হাওর বেষ্টিত অষ্টগ্রাম উপজেলার ইউনিয়নের সদয়নগর গ্রামেই গ্রামের রাস্তার পাশ দিয়ে যেতেই চোখে পড়ল অনেক লোক একত্রে বসে কি জানি করছিল ? এদের মধ্য থেকে একজনকে আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করতেই তিনি জানান,যেটা আধুনিক কৃষকদের জন্য স্কুল ।
আগ্রহ নিয়ে ভিতরে ঢুকে দেখা যায় এখানে কৃষক কৃষাণি সহ উপজেলার কৃষি অফিসের দায়িত্বে থাকা কৃষি কর্মকর্তা সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের আদর্শিত তাদের সাথে কথা হয় তারা জানেন জেনে এই স্কুলের মাধ্যমে তারা আধুনিক কৃষিতে চাষাবাদ থেকে শুরু করে ফসল উৎপাদন,কর্তন এমনকি কি সহজ উপায়ে বাজারজাত করণ পবই করার জন্য। পার্টনার প্রকল্পে এই কৃষিভিত্তিক স্কুলটি ব্যাপক আগ্রহ যোগাচ্ছে কৃষকদের মাঝে।
এসময় কথা হয় অষ্টগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিজিৎ সরকার এর সঙ্গে, তিনি জানান এই উপজেলায় পার্টনার ফিল্ড স্কুল মোট ১১ টি এবং ১১টি স্কুলে ২৭৫ জন তরুণ উদ্যমী কৃষক-কৃষাণী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন।
ইতিমধ্যে ৩ টি স্কুল সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৮ টি স্কুল জুন/২০২৫ এর মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। মাঠ স্কুলগুলোতে উত্তম কৃষি চর্চা, পুষ্টি ও ফসলের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের পাঠদান করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা, রোগ ও পোকামাকড় সনাক্তকরণ কৃষকদের শেখানো হচ্ছে। হাওরের কৃষকেরা অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত। কৃষির আধুনিকায়নের লক্ষ্যে পার্টনার প্রকল্প অন্যান্য সমতল এলাকার মত হাওর উপজেলাগুলোতেও সমহারে এরকম ফিল্ড স্কুলের বরাদ্দ দিয়ে আসছে।
পার্টনার প্রকল্পে রয়েছে প্রদর্শনীও পার্টনার প্রকল্পের আওতায় অষ্টগ্রাম উপজেলায় নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে বোরো ধানের ক্লাস্টার প্রদর্শনী বাস্তবায়িত হয়েছে। বিভিন্ন নতুন জাত যেমন ব্রি ধান-১০৮, ব্রি ধান-১০২, ব্রি ধান-১০১ এর চাষাবাদ হয়েছে অষ্টগ্রামে। তন্মধ্যে ব্রি ধান-১০৮ এর ফলন অকল্পনীয় বিঘাপ্রতি এই ধানের ফলন হয়েছে ৩১ মণ যা কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এর ফলে ভবিষ্যতে এই জাতটির ব্যাপক সম্প্রসারণের সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে হাওর অধ্যুষিত আরেক ইটনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার সাহা জানান, ইটনা উপজেলা পার্টনার প্রকল্পে কৃষকদের ফিল্ড স্কুল রয়েছে ৯টি ।এতে ২২৫ জন কৃষক কৃষাণি অংশগ্রহণ করছে । এবং সেই স্কুলের মাধ্যমে কৃষকরা বেশ উপকৃত হচ্ছে বলে একাধিক কৃষকের ভাষ্য। এদিকে টাঙ্গাইল জেলা সুখিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন জানিয়েছেন,এই উপজেলা পার্টনার প্রকল্পে কৃষকদের জন্য কৃষিভিত্তিক ফিল্ড স্কুল রয়েছে ৭টি এবং এতে অংশ করছেন ১৭৫ জন কৃষক -কৃষানি। এবং এই প্রকল্পের আওতায় আরও ১৫০ জন কে আধুনিক কৃষিতে চাষাবাদের উপর প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।
এবিষয়ে কথা হলে প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এন্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ইন নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনারশিপ এন্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, তিনলাখ হেক্টর জমিতে সবজি ও ফল চাষাবাদ হবে। পাঁচ ধরনের নতুন জাত উদ্ভাবন হবে গ্যাপ প্রটোকল মেইনটেন করে । ঘাত ও সহনশীল, কম সময়ে ধানবাদের অন্যান্য ১৫ টি জাত উদ্ভাবন হবে। আধুনিক সেচ সম্প্রসারণ হবে,কৃষিতে যোগ উপযোগী রুপান্তরিত হবে ।