শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

নিয়ামতপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
  ১০ মে ২০২৫, ১৮:২৬
নিয়ামতপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ
ছবি: যায়যায়দিন

নওগাঁর নিয়ামতপুরে জীবিত নবজাতককে মৃত ঘোষণা করায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ উঠেছে নিয়ামতপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তার রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি উপজেলায় টপ আফ দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, গত (৯ মে) শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গোপাল চক এলাকার ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগমের (২৮) রক্তক্ষরণ হলে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ওই ক্লিনিকে ভর্তি হোন।

ক্লিনিকের মালিক অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটের বাচ্চা মারা গিয়েছে বলে তাদের জানান এবং দ্রুত সিজার অপারেশ করার পরামর্শ দেন। সিজার অপারেশন না করলে প্রসূতিকে বাঁচানো যাবে না বলে তাড়াহুড়ো শুরু করেন। তাদের তাড়াহুড়োয় মেয়েকে বাঁচানোর জন্য অপারেশন করার অনুমতি দেন প্রসূতির বাবা-মা। এ ঘটনায় রাজশাহী মেডিকেলজ হাসপাতালের ডাক্তার রুহুল আমিন বিকাল ৫ টায় সিজার অপারেশনের টেবিলে নেন নাজমা বেগমকে।

অপারেশন শেষে ডাক্তার রুহুল আমিন নবজাতক শিশুকে মৃত বলে একটি কাটুনের মধ্যে ভরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে বলেন নবজাতকের আত্মীয় স্বজননের কাছে দেওয়ায় জন্য। এ সময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ক্লিনিক মালিক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে রাত ৮ টার দিকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। ভুলক্রমে প্যাকিং বাক্সে অপারেশনের কাঁচিও রেখে দেন।

বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যরা দাফনের প্রস্তুতির সময় হঠাৎ সেই নবজাতক নড়ে ওঠে। শিশুটির প্রাণ আছে বুঝতে পেরে দ্রুতই উপজেলা সদরে আসেন। থানায় বিষয়টি অবহিত করলে তাঁরা উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন।

প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কায়সার রহমান শিশুটি জীবিত রয়েছে বলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। রাজশাহী মেডিকেল নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই অন্তঃসত্ত্বার মা নাজমা বলেন, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের তাড়াহুড়ার কারণে দ্রুত অপারেশন করা হয়েছে। শিশুটি মারা গেছে বলে আমাদের কাছে তুলে দেয়। দাফন করার উদ্দেশ্য নিয়ে গেলে শিশুটি নড়ে ওঠে। আমরা খুব অসহায় মানুষ, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

ক্লিনিকের মালিক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী পারমিতার দাবি, অন্তঃসত্ত্বা নারীর পরিবারের সাথে আলোচনার মাধ্যমেই অপারেশন করা হয়েছে। নবজাতক মৃত্যুর ঘটনাটি দূর্ঘটনা বলছেন তাঁরা।

ডাক্তার রুহুল আমিন বলেন, অপারেশন করার পর নবজাত শিশুটি কোন নড়াচড়া না করায় আমরা মৃত ধরে নিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ অবজারভেশনে রেখে বাচ্চাকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে বলে চলে আসি আমি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ফয়সাল নাহিদ বলেন, এ ধরনের রোগীর অপারেশন ক্লিনিকে করা ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, নবজাতককে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে