দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম মূল্যায়ন পরীক্ষায় সহকারী শিক্ষকদের ব্ল্যাকবোর্ডে উত্তর লিখে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ফাঁস হয়েছে।
এতে প্রাথমিকের শিক্ষার মান ও শিক্ষকদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবক ও সচেতন মহলরা। সোমবার ১২ মে ও মঙ্গলবার ১৩ মে উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয় সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, গণিত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষকরা পরীক্ষার হলে ব্ল্যাকবোর্ডে প্রশ্নের উত্তর লিখে দিচ্ছেন ও মুখ দিয়ে বলে দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীরা তা দেখে দেখে ও শুনে উত্তরপত্রে লিখছে। এমন সময়ে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে ব্ল্যাকবোর্ড মুছে পরিষ্কার করেন জড়িত শিক্ষকরা।
সরেজমিনে পরিদর্শনে এমন অনিয়মের চিত্র দেখা গেছে সাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর টংগুয়া দাতাকর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদার পীর, মধ্য জাহাঙ্গীরপুর, তেবাড়িয়া, সুবর্ণখুলি ওকরাবাড়ি, সুবর্ণখুলি, উত্তর ভেড়ভেড়ী ও ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এছাড়াও অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন এই প্রতিবেদক।
স্থানীয় এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো হয় পড়াশোনা শেখানোর জন্য কিন্তু শিক্ষকরা যদি নিজেরাই পরীক্ষার সময় উত্তর লিখে দেন, তাহলে শিশুদের শেখার সুযোগ কোথায় ? এজন্যই সবাই প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের দিকে ঝুঁকতেছে।
এ বিষয়ে একাধিক শিক্ষক বলেন, ব্লাকবোর্ডে লিখে দেওয়া আমাদের ভুল হয়েছে। শিক্ষক হিসেবে এই কাজ করা কতটা যৌক্তিক ও নৈতিক এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে না পেরে চরে যান শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির তালুকদার বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে মনিটরিং জোরদার করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘এমন ঘটনা মোটেও প্রত্যাশিত নয়। শিক্ষার মানোন্নয়নে উপজেলা প্রশাসন সর্বদা সজাগ আছে। এই অপরাধের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে কঠোর নির্দশনা প্রদান করা হয়েছে।’