শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
নেতা বিএনপির, কার্যকলাপ আওয়ামী ঘরানার

শরীয়তপুরে উপজেলা বিএনপি সভাপতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ

নড়িয় (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
  ১৭ মে ২০২৫, ১১:৫৪
শরীয়তপুরে উপজেলা বিএনপি সভাপতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ
ছবি: যায়যায়দিন

নেতা হিসেবে পরিচিত বিএনপির, কিন্তু কার্যকলাপে যেন আওয়ামী লীগের অনুসারী। শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম দাদন মুন্সির বিরুদ্ধে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন একই উপজেলার বিএনপির সদস্য মো. ফেরদৌস মুন্সী।

সম্প্রতি তিনি দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন, যেখানে দাদনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, চাঁদাবাজি ও স্বার্থান্বেষী কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

1

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, দাদন মুন্সি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমের মামাতো ভাই। এই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে গোপন আঁতাতে লিপ্ত হয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছেন।

প্রকাশিত অভিযোগ অনুযায়ী, ৯ মে নওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হন তিনি,

যা নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অভিযোগ আরও রয়েছে, সুরেশ্বর ঘাটের একটি মাছের আড়ৎ জোরপূর্বক বন্ধ করে তিনি ২৪ লাখ টাকা আদায় করেন, যা পরবর্তীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়।

এছাড়া, পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলনের অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ২০২১ সালে খাস জমি জবরদখল ও জমি সংক্রান্ত সালিশের নামে অর্থ আদায় এবং বাজার ও ঘাট দখল করে স্থানীয়দের হয়রানির অভিযোগও রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দাদন মুন্সি বলেন, শুনেছি ফেরদৌস আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তবে কেন করেছে তা জানি না। সে আমার চাচাতো ভাই এবং আওয়ামী লীগ নেতা শামীমের মামাতো ভাই। সে একসময় আওয়ামী লীগ করেছে এবং এখন নোয়াপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির পদে আসতে চায়।

অভিযোগ প্রসঙ্গে নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর বলেন, সুরেশ্বর মাছঘাট, পদ্মার বালু, নওপাড়ার আলু ও খাস জমি দখলসহ সব অভিযোগ সত্য। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে চরআত্রা ও নওপাড়া ইউনিয়নে বিএনপি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

জেলা পর্যায়ের প্রতিক্রিয়ায় শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু অভিযোগ দেখেছি। তবে কেউ এখনো লিখিতভাবে কিছু দেয়নি। প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় বিএনপি অঙ্গনে তীব্র আলোচনা ও বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে। এখন নজর কেন্দ্রীয় দপ্তরের দিকে—দেখা যাক, তারা কী পদক্ষেপ নেয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে