রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নিয়ামতপুরে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড বিভিন্ন এলাকা

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
  ১৭ মে ২০২৫, ১৭:১০
নিয়ামতপুরে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড বিভিন্ন এলাকা
নওগাঁর নিয়ামতপুরে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যক্তিকে ঢেউটিন দিয়ে সহযোগিতা করেন ইউএনও মুর্শিদা খাতুন: ছবি যায়যায়দিন

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে নওগাঁর নিয়ামতপুর। ১৫ থেকে ২০ মিনিটের ঝড়ে ধান, বিদ্যুতের খুঁটি, বাড়ি ঘর, দোকানপাটসহ আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ঝড়ের স্থায়িত্ব কম হলেও কোথাও কোথাও বাতাসের বেগ বেশি হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিন ও গাছপালার ক্ষতির পাশাপাশি উড়ে গেছে বিভিন্ন স্থাপনা।

1

শুক্রবার (১৬ মে) দিবাগত রাত ১০টার দিকে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীতে নিয়ামতপুরের হাজিনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম, সদর ইউনিয়নের বাতপাড়া গ্রাম, ভাবিচা ইউনিয়নের মাদ্রাসাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘর তছনছ হয়ে যায়। পাশাপাশি ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একইসঙ্গে গাছপালাসহ বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় এখনো বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অধিকাংশ এলাকা।

সরেজমিনে সদর ইউনিয়নের বাতপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিধ্বস্ত বাড়ির আঙিনায় প্রতিবন্ধ মুজাহার ও তার ছেলেকে নিয়ে বাড়ির টিন উড়ে যাওায় আহাজারি করছে।

কেমন আছেন- প্রশ্ন করতেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন মুজাহার।

তিনি বলেন, ‘আমি একজন প্রতিবন্ধি মানুষ, আমার একটি পা নাই। ঝড়ের সময় আমরা স্বপরিবারে শুয়ে ছিলাম।

হঠাৎ বাতাসে আমাদের থাকার ঘরের চালা উড়ে যায়। এরপর বৃষ্টি শুরু হলে পুরো বৃষ্টির পানি ঘরের মধ্যে চলে আসে।

বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে আজ শনিবার দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্তনালয়ের সহযোগিতায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুর্শিদা খাতুন আমাদের ঢেউটিন দিয়ে সহযোগিতা করেন। স্যারের এমন মহতী উদ্যােগকে আমি সাধুবাদ জানাই।’

সাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গত রাতের ঝড়ে আমাদের মাদ্রাসার ১৩০ ফিট লম্বা ভবনের পুরো ছাউনি উড়ে গেছে। এর ফলে আমার অফিসের সকল কাগজপত্র ভিজে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়েছে। এতে করে আমাকে ভিষণ ঝামেলা পোহাতে হবে। তার উপর এখন মাথায় চিন্তা কিভাবে ছাত্র ছাত্রীদের শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করাব।’

ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মেশবাহুল হক বলেন,

শুক্রবার রাতের ঝড়ে নিয়ামতপুরের বিভিন্ন এলাকাগুলোতে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে পড়ার পাশাপাশি তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছে।

এ কারণে বেশিরভাগ লাইনগুলো শতভাগ সচল হতে আরও কিছু সময় লাগবে। তবে সবগুলো লাইন সচল করতে কাজ চলছে।

ইউএনও মুর্শিদা খাতুন বলেন, ‘কালবৈশাখীতে কোথায় কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তারাও মাঠে কাজ করছেন।

তাছাড়া আমি ও বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। ইতোমধ্যে ভাবিচা ইউনিয়নের সাড়া দাখিল মাদ্রাসা আমি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক পরিদর্শন করে সেখানে

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্তনালয়ের সহযোগিতায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে তিন বান টিন বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও সকল ক্ষয়ক্ষতির তালিকা আসলে যাছাইবাচাই করে জেলায় পাঠানো হবে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে