চট্টগ্রামে এবারও কোরবানি পশু সংকটের শঙ্কা নেই। স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। কোরবানিকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে আট লাখ ৬০ হাজারের বেশি গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া লালন-পালন করা হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এ বছর কোরবানির জন্য প্রায় ৯ লাখ পশুর চাহিদার বিপরীতে জেলায় ৮ লাখ ৬০ হাজার ২৮৮ পশু প্রস্তুত রয়েছে। এরপরও চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে আরও পশু আনার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পশুর হাটে সংকট নয় বরং বাড়তি পশু উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর জানান, চাহিদার তুলনায় সামান্য ঘাটতি থাকলেও এতে উদ্বেগের কিছু নেই। পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক কোরবানির পশু রয়েছে। অন্য জেলার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে, যেন কোরবানির ঈদে পশুর কোনো সংকট না হয়। ব্যবসায়ীরা সহজেই সেখান থেকে পশু বেচাকেনা করতে পারবেন। তবে গত বছরের তুলনায় খাদ্যের দাম বাড়তি থাকায় কোরবানি পশুর দাম বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।
চট্টগ্রামের পটিয়ার উপজেলার খামারি শামসুল আলম বলেন, ‘কোরবানির হাটে বসার প্রস্তুতি নিয়েছি। অনেকে যোগাযোগ করেছে সিটির ভেতরের বিভিন্ন ছোট হাটে বসার জন্য। আমরা তো গরু ও ছাগল নিয়ে যাবো। তবে দাম গতবারের চেয়ে স্বাভাবিকভাবে বাড়তি হবে। কারণ পশুখাদ্যের যে দাম বেড়েছে তাতে আমাদের মতো ছোটখাটো খামারিদের টিকে থাকাটাই মুশকিল হয়ে গেছে।’
দাম বাড়তি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বছর তিনেক আগেও গমের ভূষি ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে কিনতাম, এখন সেটা কিনতে হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। আর সয়াবিন খৈল তো আরও বেশি বেড়েছে। আগে ৪০-৪৫ টাকায় পাওয়া যেত, এখন দাম ৭০ টাকারও বেশি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই বাড়তি দামের কারণে আমাদের পশু লালনপালনের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। গরুকে ঠিকমতো খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছি। খাবারের দামের তুলনায় পশুর দাম সেভাবে বাড়ছে না। সামনে কোরবানির ঈদ, আশা করছিলাম ভালো দাম পাবো। কিন্তু বাড়তি পশুখাদ্যের কারণে এখন খরচ উঠবে কিনা সেই টেনশনে আছি। সরকারের পশুখাদ্যের দাম কমানোর দিকে নজর দেয়া দরকার। না হয় অনেকেই খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে।’
প্রসঙ্গত, কোরবানির পশুর হাটগুলোও প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং জেলা প্রশাসন নির্ধারিত স্থানগুলোতে হাট বসানোর ইজারা সংক্রান্ত দরপত্র আহ্বান করেছে। সেখানে অনুমতিসহ নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।