বল্লমের আঘাতে পায়ে ক্ষত নিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে প্রথম দফা অস্ত্রোপচারের পর কিছুটা সুস্থ হওয়ায় এবার দ্বিতীয় দফায় হাতিটিকে চিকিৎসা দিয়েছে বন বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ। ১৮ মে রবিবার শেরপুরের সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার বুরুঙ্গা কালাপানি পাহাড়ের বড়খোল এলাকার গহীন জঙ্গলে হাতিটির চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এর আগে গত ১ মে বৃহস্পতিবার বন্যহাতিটির পায়ের ক্ষতস্থানে অস্ত্রোপাচার করা হয়। ওই অস্ত্রোপাচারের পর প্রায় দুই সপ্তাহের ব্যবধানে হাতিটির পায়ের ক্ষত প্রায় ৮০ শতাংশ সেরে উঠেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, একটি বন্যহাতি পায়ে গভীর কয়েকটি ক্ষত নিয়ে তিন পায়ে কাটাবাড়ি পাহাড়ে খুঁড়িয়ে চলছিল। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে এলে বন বিভাগকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ শেরপুরের তত্বাবধানে গত ১ মে হাতিটিকে সুস্থতার উদ্যোগ নেয়।
পরে গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি দল ও স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের চিকিৎসকগণ যৌথ প্রচেষ্টায় হাতিটিকে অজ্ঞান করে চিকিৎসা শেষে পুনরায় জ্ঞান ফেরানো হয়।
পরে হাতিটি পাহাড়ের গহীনে ফিরে যায়। রবিবার দ্বিতীয় দফায় খোঁজ নিয়ে হাতির অবস্থান নির্ণয় করে পুনরায় অচেতন করে চিকিৎসা করা হয়। পরে আবারও চেতনা ফিরিয়ে বনে পাঠানো হয়।
এসময় গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, নালিতাবাড়ী প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সাকিব হোসেন সাগর, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা শাহীন কবির, শেরপুর জেলা বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার, জেলা ওয়াইল্ড লাইফ রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আমিন, মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলীসহ অন্যান্যরা অংশ নেন।
মেডিকেল টিমের প্রধান গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রায় ৩–৪ মাস আগে বল্লম জাতীয় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ওই হাতিকে আঘাত করা হয়েছিল। ৩–৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ওই আঘাতের গভীরতা প্রায় ৬ ইঞ্চির মতো।
আঘাতের কারণে হাতিটি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তার দেহের মেজর টিস্যু ড্যামেজ হয়ে যায়। প্রথম দফায় আমরা পাহাড়ে এসে ওই হাতির আঘাতপ্রাপ্ত স্থান ড্রেসিং করে তার দেহে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে চিকিৎসাসেবা দিয়ে বনে ছেড়ে দিয়েছিলাম। এতে হাতিটির ক্ষত প্রায় ৮০ ভাগ সেরে গেছে।
আজ দ্বিতীয় দফায় আবারো হাতিটিকে চিকিৎসা প্রদান করে বনে পাঠানো হয়েছে।