সারাদেশ

পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ২১ জনকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার (২২ মে) ভোর রাতে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ি সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫৭ এর ১০ নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশইন করা হয়। এদের মধ্যে ২ জন পুরুষ, ৬ জন নারী ও ১৩ জন শিশু।

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশের বড়বাড়ি এলাকায় ঘোরাফেরা করার সময় সন্দেহ হলে স্থানীয়রা বিজিবির জয়ধরভাঙ্গা ক্যাম্পে খবর দিলে ক্যাম্পের টহল দল তাদের আটক করে। পরে তাদের বিজিবির নতুন ক্যাম্প বড়বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে দুপুরের দিকে তাদের পঞ্চগড় সদর থানায় নিয়ে যায় বিজিবি। তারা সবাই খুলনা ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকার নাগরিক বলে জানিয়েছে বিজিবি।

আটককৃতরা হলেন-খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের মাজিরগাতি এলাকার ইসরাইল ফকিরের স্ত্রী আলেয়া (৫৫), তার ছেলে রব্বিল ফকির (২২), পুত্রবধূ শিমলা (১৯), নাতনি আলিশা (০৩), নাতি আয়ান (৩ মাস), একই এলাকার ইব্রাহিম ফকিরের স্ত্রী হেলেনা (২৭), মেয়ে রোজিনা (৮), ছেলে ইসমাইল (০৫)।

ওই জেলার গাজির হাট ইউনিয়নের গাজির হাট এলাকার ফরহাদ শেখের স্ত্রী স্বপ্না (২৯), ছেলে ফারজানা (১২), মেয়ে আফসানা (৯), মরিয়ম (০৩)।

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর এলাকার আশিক সরদারের স্ত্রী রোজি (৩৯), তার ছেলে রানা (১৭), মেয়ে আয়েশা (০৪)

একই এলাকার আজি এর স্ত্রী শিমা (৩০), মেয়ে কুলসুম (১০), ছেলে রহমান (০৬), রেহমান (০৫), মেয়ে আফরিন (০৩) এবং ছেলে রেহমাত আলী (০২)।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, আটককৃতরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধভাবে অবস্থান করে কাজ করছিলেন। গত ২১ মে ভারতীয় পুলিশ তাদেরকে গুজরাট এলাকা থেকে আটক করে বিমানযোগে কলকাতা নিয়ে আসে।

পরে কলকাতা থেকে বাসযোগে ২২ মে রাত দুইটার দিকে বিএসএফের ৯৩ ব্যাটালিয়নের টিয়াপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের নিকট হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে টিয়াপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প তাদেরকে বড়বাড়ি সীমান্ত গেইট দিয়ে বাংলাদেশে পুশ-ইন করে।

পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এইচএসএম বদরুদ্দোজা বলেন, ‘নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ২১ জনকে আটকের পরে বিজিবি আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তাদের আদালতে তোলা হবে।’

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, ‘জয়ধর ভাঙ্গা ক্যাম্পের বড়বাড়ি সীমান্ত দিয়ে নারী শিশুসহ ২১ জনকে অবৈধ উপায়ে বাংলাদেশের পাঠিয়েছে বিএসএফ। পরে আমাদের টহল দল সীমান্তে তাদের আনাগোনা দেখে আটক করে।’

‘ইতোমধ্যে আমাদের ব্যাটালিয়ন কোম্পানি ও ক্যাম্প কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা বিএসএফের কাছে জানতে চেয়েছি, তারা কেন অবৈধ উপায়ে বাংলাদেশে তাদেরকে ফেরত পাঠালো। বিজিবিকে জানিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের ফেরত পাঠানো উচিত ছিল। এ বিষয়ে আমরা বিজিবি পক্ষ থেকে অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা দায়ের করব। তবে যারা শিশুর রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নয়।’

‘সীমান্তে বিজিবি সর্বদা সচেতন আছে। যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবেলায় বিজিবির টহল দল ২৪ ঘন্টা সীমান্তে কড়া টহলদারি করছেন।’

এর আগে গত ১৭ মে বোদা উপজেলার মালকাডাঙ্গা ও ডানাকাটা সীমান্ত দিয়ে ১১ জন বাংলাভাষী নারী, পুরুষ ও শিশুকে পুশ ইন করে বিএসএফ।