জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির স্মৃতিধন্য ত্রিশালের দরিরামপুরে নজরুল জন্মজয়ন্তী ও মেলার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
শেষ মুহুর্তে প্রস্তুতির কর্মযজ্ঞ চলছে নজরুল একাডেমির মাঠ জুড়েই। “চব্বিশের গণ অত্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার” এ প্রতিপাদ্য নিয়ে মহান কবির ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হতে যাচ্ছে। সাংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগীতায় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সরকারি নজরুল একাডেমি মাঠে (২৫ থেকে ২৭ মে) তিন দিনব্যাপী নজরুল জন্মজয়ন্তী ও মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
নজরুল মঞ্চ ও মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখাযায়, নজরুল মঞ্চের সাজ সজ্জার শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতির কর্মযজ্ঞ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ডেকোরেশন, লাইট ও সাউন্ড সিস্টেম, বিদ্যুৎ শ্রমিকরা। স্থানীয় সরকারি নজরুল একাডেমি মাঠে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দোকানিরা এসেছে।
এ মেলায় বেচাকেনা ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছেন পণ্য সামগ্রী নিয়ে। মেলায় স্টল তৈরি ও পসরা সাজানো গুছানো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখে গেছে মেলায় আগত ব্যবসায়ীদের। অনেকেই আগে ভাগেই পসরা সাজিয়ে বেচাবিক্রি শুরু করেছেন।
নিত্য প্রয়োজনীয় গৃহস্থালির দা-বটি, বেলনা ও হাঁড়ি-পাতিল, আসবাবপত্র, পোড়া মাটি ও চীনা মাটির তৈজসপত্র, অরনামেন্টস, কাঠ, বাঁশ ও বেতের জিনিস, প্রসাধনী, ঘর সাজানোর দ্রব্যাদি থেকে শুরু করে নানা ধরণের পণ্য নিয়ে এসেছে ব্যবসায়ীরা।
আচার, চটপটি ও জিলাপি থেকে শুরু করে নানা রকমের মুখরোচক খাবারের স্টলেরও কোনও কমতি নেই নজরুল মেলায়। ক্রয়-বিক্রয় ছাড়াও বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, পুতুল নাচ, সার্কাস, যাদু ইত্যাদির আয়োজন থাকবে। মেলায় অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে প্রস্তুত হয়েছে বইয়ের স্টল। এছাড়াও নজরুল মঞ্চে তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা, নাটক, গান, কবিতা ও নৃত্যের ঝংকারে নজরুল সঙ্গীত শিল্পী, গবেষক এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গণের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর হবে এ আয়োজন।
মেলার প্রস্তুতি দেখতে আসা নজরুল ভক্ত স্থানীয় স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী সুমাইয়া, হাফসা, মালা, সুবর্ণা, লিয়া, তন্নী, মারিয়া ও ইসমত আরা বলেন, কবি নজরুল আমাদের জন্য অহংকারের। ত্রিশালে কবি নজরুলের নামে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন রয়েছে। প্রতিবছর ১১ জৈষ্ঠ্য ত্রিশালে নজরুল জয়ন্তী হয়, যা আমাদের প্রাণের উৎসব। এ মেলায় পার্শ্ববর্তি জেলাগুলো থেকে দর্শনার্থীরা আসে। তাই আমরা মেলার প্রস্তুতি দেখতে এখানে ঘুরতে এসেছি।
কসমেটিকস পণ্যের দোকানি মানিকগঞ্জ থেকে আসা মোতালেব হোসেন বলেন, অনেক বছর ধরে এই মেলায় কসমেটিকস পণ্য বেচাকেনা করি। প্রতিবছরই বেচাকেনা ভালো হয়। এবারও বেচাকেনা আশানুরূপ হবে প্রত্যাশা করছি। আগে ৫ দিনব্যাপী মেলা হতো। এখন তিন দিনব্যাপী মেলা হবে। এতে ব্যবসায়ীরা খুব একটা লাভবান হতে পারবেন না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী জানান, মেলায় নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করবেন। নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।