জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় নারী নেতৃত্বকে শক্তিশালী করা এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় স্বাস্থ্যখাতের প্রস্তুতি জোরদার করার লক্ষ্যে সিলেটে একটি অ্যাডভোকেসি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার ২৬ মে সিলেটের হোটেল মেট্রোপলিটন ইন্টারন্যাশনালে পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের নেতৃত্বে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
“নারী-নেতৃত্বাধীন জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা কর্মসূচি”-এর অংশ হিসেবে আয়োজিত এ কর্মশালায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় প্রস্তুতি এবং স্থানীয় সম্পদের কার্যকর ব্যবহারসহ নীতি ও অর্থায়ন সহযোগিতার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা: মো: আনিসুর রহমান। কর্মশালায় বক্তারা বলেন, “বাংলাদেশ স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রায় প্রতি বছর সেই অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই শুধু উন্নয়ন নয়, দুর্যোগের সময়ও স্বাস্থ্যসেবা চালু রাখার জন্য সুদৃঢ় প্রস্তুতি গ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।”
কর্মশালায় “ওমেন-লেড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স” প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত একটি গবেষণা উপস্থাপন করা হয়, যাতে দেখা যায় ২০২২ সালের বন্যায় সিলেটের চারটি উপজেলার ৬৩ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ ছিল।
দুর্যোগকালীন সময়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর কাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি এবং সেবার ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি এতে স্পষ্টভাবে উঠে আসে।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, অধিকাংশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে দুর্যোগ প্রস্তুতির জন্য আলাদা খাতওয়ারি বাজেট বরাদ্দ নেই। এ বিষয়ে বক্তারা বলেন, স্থানীয় সরকারের স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট বাজেট যেন দুর্যোগ প্রস্তুতিতে কার্যকরভাবে ব্যবহার হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
বক্তারা বলেন, “স্বাস্থ্যখাত যেন দুর্যোগকালেও সচল থাকে, সে লক্ষ্যে প্রণোদনামূলক পরিকল্পনার পাশাপাশি স্থানীয় সম্পদ ব্যবহারের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। একইসঙ্গে সকল স্টেক হোল্ডারদের সম্পৃক্ত করে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।”
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনার উপপরিচালক মো. নিয়াজুর রহমান ডা. জন্মেজয় দত্ত (ডেপুটি সিভিল সার্জন), এবং আবুল কুদ্দুস বুলবুল (জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা)।
এছাড়াও সিলেট জেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং সিলেটের চারটি উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপজেলা ম্যানেজার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।