সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ইসিএ এলাকার জাফলং নদী থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ করে চা-বাগান রক্ষার দাবিতে কর্মবিরতি করে মানববন্ধন করেছে জাফলং চা বাগানের কর্মরত শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে উপজেলার জাফলং চা-বাগান সংলগ্ন নদীর পাশে ও ব্রিজের উপরে দুই ঘন্টা ব্যাপী জাফলং চা-বাগান বাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জাফলং চা-বাগানের ব্যবস্থাপক সাহাব উল্লাহ সরকারের সভাপতিত্বে ও সাবেক ইউপি সদস্য সারবেন মাহালীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রভাবশালী একটি চক্র সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে উপজেলার জাফলং নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে অবৈধপন্থায় যন্ত্র দানব দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করে পরিবেশ ধ্বংস করছে।
এই ধ্বংসলীলার মাধ্যমে ক্ষতি হচ্ছে দেশের সর্ব বৃহত সমতল চা-বাগান। অপরদিকে আসন্ন বন্যায় নদী গর্ভে বাড়িঘরসহ ফসলি জমি বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় দিন পার করছে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। তাদের এসব কার্যক্রমের প্রতিবাদ করলে প্রাণনাশের হুমকিসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে
এ সময় বক্তারা আরও বলেন, জাফলংয়ে কোনভাবেই থামছে না বোমা মেশিনের তাণ্ডব।অনুমোদিত ও অপরিকল্পিতভাবে অবৈধ এ যন্ত্রের মাধ্যমে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তা বন্ধ হচ্ছে না। এ কারণে নদীভাঙন দেখা দিয়ে হুমকির মূখে আমাদের চা-বাগানসহ আশপাশ এলাকা।প্রশাসন নিষিদ্ধ এ যন্ত্রের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করলেও প্রশাসনের নজর এড়াতে জড়িতরা গভীর রাতে বালু-পাথর তুলছে।
জাফলং চা-বাগানের ব্যবস্থাপক সাহাব উল্লাহ সরকার বলেন, বোমা মেশিন মূলত পাওয়ার পাম্প আর পাইপ দিয়ে তৈরি একটি যন্ত্র। চলার সময় এটি বোমা বিস্ফোরণের মতো বিকট শব্দ হয়। তাই এর নাম ‘বোমা মেশিন’। গভীর রাতে মেশিন চালু করলেই ঘুম হারাম। এছাড়া এ মেশিনের কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে জাফলং চা-বাগানসহ ও ফসলি জমির ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তা-ঘাট ভেঙে যাচ্ছে।
পরে মেরামত করে আবারও চালানো হয়। এভাবে নাটক সাজিয়ে প্রশাসন অবৈধ এ কাজে জড়িতদের সহায়তা করছে। অথচ তারা চাইলেই বোমা মেশিন বন্ধ করা সম্ভব।
অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ করে চা-বাগান রক্ষার দাবিতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জাফলং চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন, ফিল্ড সুপারভাইজার কফিল উদ্দিন লিটন, ইউপি সদস্য সইলেন দেব, মহিলা ইউপি সদস্য রিনি প্রধান, জাফলং চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির উপদেষ্টা সজল রন্জন চাষা, পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিতাই পাল, সদস্য অঞ্জলি মাহালী প্রমুখ।
মানববন্ধনে জাফলং চা বাগানের শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে।