চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক কোরবানির পশুর হাটে এবার ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে তিনটি উট। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে যশোরের বেনাপোলের ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্ম থেকে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১০টার দিকে নিয়ে আসা হয় উটগুলো।
এসব উট দেখতে ছোট বড় উৎসুক জনতা ভিড় করছে বাজারে। উটের সঙ্গে মোবাইলে সেলফি তুলতে ভিড় করতে দেখা যায়। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ব্যতিক্রমী এই দৃশ্য তৈরি হয়েছে এ বাজারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর ও পূর্ব আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্য এশিয়ার কিছু অংশে উট পালন একটি পুরোনো ঐতিহ্য। এই প্রাণীটি শুষ্ক পরিবেশে টিকে থাকার জন্য বিশেষভাবে সক্ষম।
শুধু বাহ্যিক আকর্ষণ নয়, উটের মাংসও পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, কম ফ্যাট ও কোলেস্টেরল রয়েছে। আয়রন, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ এই মাংস অনেক দেশের খাদ্যতালিকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।ডেইরি ফার্মের প্রতিনিধি মন্টু হোসেন জানান, ‘মইজ্জ্যার টেক সিডিএ আবাসিক গরুর বাজারে প্রতিবছর দেড় শতাধিক গরু নিয়ে আসি। এবারই প্রথমবারের মত উট নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, দুই বছর আগে ২১-২২ লাখ টাকায় ঢাকা থেকে উটগুলো কেনা হয়। প্রতিদিন ছোলা, ভুট্টা, গম, বুটের খোসা, মশুর ডাল, ছোলা, গম ও কাঁচা ঘাস খাওয়ান। উটগুলোকে প্রতিদিন সকালে গোসল করানো হয়। ক্রেতারা দেখার জন্য আসছেন, দাম জানতে চাইছেন।
উটের খবরে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে এই মইজ্জ্যার টেক গরুর বাজার। অনেকে শুধুই দেখার জন্য আসছেন, কেউবা পরিবারসহ এসে কেনার আগ্রহ নিয়ে খোঁজ–খবর নিচ্ছেন। কোরবানির জন্য দরদামও করছেন অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাজ্জাদূর রহমান বলেন, ‘আমি তো আসলে ছবি তুলতেই এসেছি। উট তো সাধারণত চট্টগ্রামে দেখা যায় না। এত কাছ থেকে উট দেখা আর সেলফি তোলা-এটা বেশ মজার অভিজ্ঞতা। তবে আমার মনে হয়, দামটা একটু বেশি। অনেকে আসলে দেখতেই আসে, কেনার মতো প্রস্তুতি খুব কম মানুষেরই থাকে।’
কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যার টেক সিডিএ আবাসিক মাঠের গরুর বাজারের ইজারাদার মো. জসিম উদ্দীন জুয়েল জানান, আসলে মইজ্জ্যার টেক বাজারটি শুধুমাত্র গরুর বাজার নয়।
এটি যেন কুরবানির পশুর অন্যতম আকর্ষণীয় বাজার। গত বুধবার দৈনিক আজাদী পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ‘সাদা পাহাড়’ নামে একটি গরু’র ছবিসহ সংবাদ প্রকাশের পর অনেক উৎসুক জনতা গরুটি দেখতে বাজারে ভিড় করছেন।
এবার নতুন করে কুরবানির এ বাজারে মরু’র জাহাজ খ্যাত সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রাণী উট আসায় এ বাজারের আকর্ষণ বেড়েছে।