সারাদেশ

নেত্রকোণার পূর্বধলায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে একটি গরু ও একটি পোষা কুকুরের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরও একটি গরু আহত হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের সাত্যাটি গ্রামে আজ শনিবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের অবহেলার কারনে এমনটা ঘঠেছে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিরে যাওয়ার সময়মত পদক্ষেপ না নেওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটছে।

বিদ্যুৎ অফিসের দাবী, অবহেলা নয় বিদ্যুৎ কর্মচারীদের গণহারে বদলীর কারনে দ্রæত লাইন মেরামতের কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, সাত্যাটি গ্রামের আব্দুর রহিম (৫৫) এর বাড়ির পাশে বৃহস্পতিবার রাতে ঝড়ের সময় একটি বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে পড়ে। বিষয়টি শুক্রবার সকালে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের অভিযোগ নাম্বারে জানালে ঐদিন বিকেল ৪টার দিকে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে মেরামতের চেষ্টা করেন এবং ৫-৬টি বাড়ির লাইন কেটে চলে যান।

এতে ঠিকভাবে লাইন বিচ্ছিন্ন না করায় সন্ধ্যায় ফের সচল হলে কিছু ঘরে আগুন ধরে যায়। পরে পুনরায় বিদ্যুৎ অফিসে কল করে বিদ্যুৎ বন্ধের অনুরোধ জানানো হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরদিন শনিবার আব্দুর রহিমের একটি গরু ক্ষেতে ঘাস খাওয়ার জন্য ছেড়ে দিলে ক্ষেতে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক লাইনের ক্ষেতে গেলেই গরুটি হঠাৎ লাফিয়ে পড়ে এবং কিছুক্ষণ পর নিথর হয়ে যায়। আব্দুর রহিম জানান সচল বৈদ্যুতিক তার ছিরে ক্ষেতের পানিতে পড়ে থাকায় আমার গরুটি ওই বিদ্যুতায়িত পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়।

গরুটির অস্বাভাবিক আচরণ দেখে তাদের পালিত একটি কুকুর সেখানে ছুটে গেলে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারায়। একই সময় গ্রামের আরেক বাসিন্দা আলাল মিয়ার একটি গরুও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হয়।

নিহত গরুর মালিক আব্দুর রহিম জানান, দুর্ঘটনায় আমার একটি গরু ও পালিত কুকুরটি মারা গেছে এবং আমাদের সবার জীবন ঝুকির মধ্যে ফেলেছিলো। তিনি তার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

এ ঘটনায় একাধিক লাইনম্যান জানান, নি¤œমানের সামগ্রী দিয়ে লাইন নির্মাণ করায় সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতেই বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে পড়ে। মানসম্মত ও আধুনিক যন্ত্রাংশের অভাবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাদের দাবি উপস্থাপন করে আসছেন । এটা একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা। আমরা লাইনম্যানরা আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝড় বৃষ্টির মধ্যে নিরলসভাবে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি।

দুর্ঘটনার পররই পূর্বধলা পল্লী বিদুৎ অফিসের এজিএম দুলাল হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করেন এবং তিনি জানান, সম্প্রতি আরইবির নির্দেশনায় একযোগে সারাদেশে সকল পিবিএসের কর্মচারীদের গণহারে বদলী করা হয়ছে। এতে নতুন স্টাফদের নিয়ে লাইন মেরামতে কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আকরাম হোসেন সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় পূর্বধলা জোনাল অফিসের ডিজিএম ও এজিএমকে দায়িত্ব দিয়ে একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলা থাকলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।