টানা ভারি বর্ষণে পাহাড়ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম নগরের গুরুত্বপূর্ণ বায়েজিদ সংযোগ সড়কের এক পাশে গত পাঁচ দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সড়কটির এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটির কাছে পাহাড় থেকে ইতোমধ্যে কিছু মাটি ও গাছপালা ধসে পড়ে প্রতিবন্ধকতারও সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে বায়েজিদ থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটিতে একমুখী যান চলাচল করছে।
সোমবার (২ জুন) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির এক পাশে খাড়া পাহাড় থেকে মাটি ধসে দুটি জায়গায় স্তূপ হয়ে আছে এবং একটি গাছও সড়কের ওপর পড়ে রয়েছে। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে এবং ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদ বিন আনোয়ার জানান, বৃষ্টির কারণে পাহাড়ধসের ঝুঁকি এড়াতে সড়কটির একপাশ পাঁচ দিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃষ্টি থেমে গেলে খুলে দেওয়া হবে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই সড়কে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। ওই সময় সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস বলেছিলেন, এই সড়কের বেশ কিছু জায়গায় পাহাড় কেটে সংস্কার করা দরকার। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি না পাওয়ায় আমরা সেটি করতে পারিনি। শিগগিরই অনুমতি পাওয়া যেতে পারে। এরপর আমরা স্থায়ী সমাধানের করতে পারব।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর যানজট সমস্যা সমাধানের জন্য বায়েজিদ বোস্তামি থেকে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করছে সিডিএ। চার লেনবিশিষ্ট সড়কটি নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২০ কোটি টাকা। এরপর তা বেড়ে ৩৫৩ কোটিতে দাঁড়ায়।
একাধিকবার প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০১৯ সালে শেষ করার কথা ছিল। পরে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত আবার কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে, চট্টগ্রামে গত ছয় দিন ধরে মাঝারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে এবং সোমবারও দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৩৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল রোববার (১ জুন) সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছিল, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। একইসঙ্গে সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় পাহাড়ধস এবং আকস্মিক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছিল। বায়েজিদ সংযোগ সড়কের এই আংশিক বন্ধের সিদ্ধান্ত সেই সতর্কতারই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।