বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার ২০২১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েও প্রশাসনিক জটিলতা ও প্রতিপক্ষের কারচুপির ফাঁদে পড়ে মেয়র পদ হারানোর অভিযোগ তুলে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফ জহির সাজ্জাদ হান্নান।
সোমবার দুপুরে বরিশালের প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তিনি মামলা দায়েরের আবেদন করেন। আবেদনে তিনি নিজেকে গৌরনদী পৌরসভার বৈধ মেয়র দাবি করে প্রয়োজনীয় আইনি স্বীকৃতি প্রার্থনা করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজাদ রহমান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের বিচারক মো. ইউনুস খান আবেদনটি পরবর্তী শুনানীর জন্য রেখে দিয়েছেন।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারির নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন শরীফ হান্নান। জনসম্পৃক্ততা ও সমর্থন বিবেচনায় তিনি এগিয়ে থাকলেও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হারিছুর রহমানের অনুসারীরা নির্বাচনের দিন সহিংসতা, ভোটকেন্দ্র দখল এবং কারচুপির মাধ্যমে ফলাফলকে প্রভাবিত করে। অভিযোগ অনুযায়ী, সরকারি প্রশাসনের নীরব সমর্থনে প্রতিদ্ব›দ্বী পক্ষ নির্বাচনটিকে একতরফাভাবে পরিচালিত করে। ফলাফল ঘোষণার আগেই অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শরীফ হান্নান ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তিনি নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সেই ঘোষণা দেন।
মামলার আবেদনকারী শরীফ জহির সাজ্জাদ হান্নান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভয়ভীতি, দমন-পীড়ন ও প্রাণনাশের হুমকির কারণে আমি আদালতের দ্বারস্থ হতে পারিনি। কিন্তু অবশেষে জনগণের প্রকৃত রায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমি আইনি পথ বেছে নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র মানে শুধু ভোট নয়, ভোটের প্রকৃত ফল মেনে নেওয়াও এর অবিচ্ছেদ্য অংশ। যে অনিয়মের মাধ্যমে আমার বিজয় কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তা শুধরে নেওয়া দরকার রাষ্ট্রীয় আইনি কাঠামোর ভেতরে থেকেই।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের তৃতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে পেশী শক্তি প্রয়োগের মাধ্যেমে বিভিন্ন অনিয়ম ও ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে জহির সাজ্জাদ হান্নান ভোট বর্জন করেছিলেন। ওইদিন বিকেলে দক্ষিণ বিজয়পুরের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত জানান।