সারাদেশ

ঈদযাত্রায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে ঘরমুখো যাত্রীরা ভোগান্তি ছাড়াই গন্তব্য পৌঁছাতে পারছেন। মঙ্গলবার (৩ জুন) মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত দিয়ে ২৪ঘন্টায় মোট যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৫ হাজার ২৭৪টি।

বুধবারও অন্যান্য দিনের মতোই টোলপ্লাজায় ঘরমুখো মানুষের চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুপুরে পদ্মা সেতু হয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে মোটর সাইকেলসহ দূরপাল্লার যানবাহন কিছুটা বেশি চলাচল করলেও টোলপ্লাজায় আটকে থাকার কোন জনভোগান্তি নেই। কেননা মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে ৮টি করে বুথসহ উভয় প্রান্তে মোট ১৬টি টোলবুথ সচল থাকায় নির্বিঘ্নে সেতু পাড়ি দিতে সক্ষম হচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের টোল রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী ৩০ মে মাওয়া ও জাজিরা দুই প্রান্ত দিয়ে মোট যানবাহন পারাপার হয়েছে ১৮ হাজার ৯৩৫টি। এতে দুই প্রান্ত মিলে মোট টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩৫০ টাকা। ৩১ মে পারাপার হয়েছে ১৯হাজার ৩২টি যানবাহন।

এতে করে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত মিলে মোট টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৫৬ লাখ ৬০ হাজার ৬শ’ টাকা। ১ জুন দুই প্রান্তে মোট পারাপার হয়েছে ২০ হাজার ৬০২টি। এতে করে মোট টোল আদায় হয়েছে ২কোটি ৮৪লাখ ৪৬হাজার টাকা। ২জুন দুই প্রান্তে মোট পারাপার হয়েছে ২২ হাজার ৪৩৩টি।

এতে করে মোট টোল আদায় হয়েছে ৩কোটি ৬লাখ ৫৯হাজার ৭শ’ টাকা। ৩জুন দুই প্রান্তে মোট পারাপার হয়েছে ২৫ হাজার ২৭৪টি। এতে করে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত মিলে মোট টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৫০ টাকা।

পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গেলো ঈদুল ফিতরের আগে থেকেই ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহনগুলো দ্রুত পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে যানবাহন চলার নির্দেশনা দিয়েছিল সেতু বিভাগ। আর এতে করে এক্সপ্রেসওয়েতে যানজট না হওয়ার পাশাপাশি কোন যানবাহনকে আটকে থাকতে হচ্ছে না।

তাছাড়া ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় ৮টি ও জাজিরা প্রান্তে ৮টিসহ মোট ১৬টি বুথ সার্বক্ষণিক সচল রয়েছে। অন্যদিকে সেতুর দুই প্রান্তে যানবাহন ও মোটরসাইকেলের উপচে পড়া ভিড় ঠেকানোসহ টোল আদায় কার্যক্রম সার্বক্ষণিক সচল রাখতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ বাড়তি ব্যবস্থা। মোটর সাইকেলের জন্য আলাদা করে দুইটি লেনে টোল আদায় করা হচ্ছে।

এদিকে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মহাসড়কের আব্দুল্লাহপুর, ধলেশ্বরী টোলপ্লাজা, ছনবাড়ী, খানবাড়ীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বাড়তি টহল টিম বসিয়ে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা এড়াতে বেপরোয়া গতি ও ওভারটেকিং বন্ধে টহল কার্যক্রম জোরদার করেছে জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ বিভাগ।

সেতু কর্তৃপক্ষের পদ্মা সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ নিলয় বুধবার দুপুরে জানান, টোল প্লাজা হয়ে যানবাহন চলাচল বাড়লেও অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবেই এসব যানবাহন পদ্মা সেতু অতিক্রম করছে।

মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে মোট ১৬টি টোল বুথ সার্বক্ষণিকভাবে সচল রাখায় টোলপ্লাজায় যানজটে আটকে থাকার কোন জনভোগান্তি নেই।

একইসঙ্গে ঈদের আগ মুহুর্তে বাড়তি যানবাহনের চাপ সামলাতে টোল প্লাজায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা দিতে বিকল্প হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪জন অতিরিক্ত টোল কালেক্টর।

হাঁসাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জিলানী দুপুরে জানান, দিনভর ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের চালাচল বেড়েছে তবে কোথাও কোন যানজটের জনভোগান্তি নেই।

ঈদের আগ মুহুর্তে বুধবার থেকেই ঘরমুখো মানুষের গণপরিবহন ও ঢাকামুখী পশুবাহী যান চলাচল আগের তুলনায় বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া এক্সপ্রেসওয়েতে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের আটটি ইউনিট দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।

অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনা এড়াতে বেপরোয়া গতি ও ওভারটেকিং বন্ধে বিভিন্ন পয়েন্টে টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

পদ্মা সেতুর উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন দুপুরে জানান, টোলপ্লাজা হয়ে যানবাহনের চলাচল স্বাভাবিকই রয়েছে।একইসাথে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেতু এলাকায় থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের একাধিক টিম কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।