ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন। যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের কলহ এবং পুলিশের অভিযোগ না নেওয়ার ঘটনায় মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য।
নিহত গৃহবধূর নাম মিনা আক্তার (২৫)। পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
তারাকান্দা উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের স্বামীর বাড়ির পাশের জঙ্গলে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় মিনার লাশ দেখতে পান তার শাশুড়ি। ঘটনার পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ বিষয়ে তারাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) টিপু সুলতানের কাছে বার বার ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কোন ফোন রিসিভ করেন নাই।
তবে নিহত মিনার পরিবারের অভিযোগ, এটি আত্মহত্যা নয়, ঠাণ্ডা মাথায় করা নির্মম হত্যাকাণ্ড। মিনার ভাই এমদাদুল বলেন, “বোনকে যৌতুকের জন্য বিয়ের পর থেকেই চাপ দিতেন স্বামী সোহাগ। মারধরের অভিযোগ আগেও ছিল।
এবার মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা থানায় পাঁচজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করতে চাইলেও ওসি সাহেব অভিযোগ নিতে চাননি। বরং অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছেন।”
মিনার পরিবারের দাবি, তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। বাঁশ ও রড দিয়ে পেটানো হয়েছে এমন তথ্য দেন মিনার বোনও। এমনকি পাশের বাড়ির লোকজনও মিনার লাশ উঠানে পড়ে থাকতে দেখেছেন বলে ফোনে তাদের জানিয়েছেন। পরে লাশ গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তাদের সন্দেহ।
এদিকে মিনার শ্বশুর বাড়ির ছোট ছোট বাচ্চারাও জানিয়েছে, ঘটনার দিন স্বামী-স্ত্রী ও শাশুড়ির মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা চলছিল।
নিহতের ভাই বলেন, “আমি নিজে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি, সাক্ষীও ছিল। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
একজন নারীর মৃত্যু, যেটি আত্মহত্যা না হত্যা—তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে পরিবারের অভিযোগ এবং ঘটনাপ্রবাহে উঠে আসা অসঙ্গতি ইঙ্গিত দেয় বড় ধরনের একটি অপরাধের দিকে। প্রশাসনের দায়িত্ব নিরপেক্ষ তদন্ত ও যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। নইলে বিচারহীনতার সংস্কৃতিই আবারও প্রমাণিত হবে।