বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

ভাঙ্গুড়ায় নৈশ প্রহরী হত্যা, আটক ২: নতুন  রহস্যের কথা জানালেন পুলিশ

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
  ১৪ জুন ২০২৫, ০৯:৪৩
ভাঙ্গুড়ায় নৈশ প্রহরী হত্যা, আটক ২: নতুন  রহস্যের কথা জানালেন পুলিশ
প্রেস ব্রিফিংয়ের সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আখতার। ছবি: যায়যায়দিন

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সি.কে.বি রোস্তামিয়া আলীম মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী আব্দুল গনিকে নৃশংসভাবে হত্যা মামলায় পুলিশ প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে নতুন রহস্যের কথা জানালেন।

পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত উপজেলার খানমরিচ ইউপি'র বৃদ্ধমরিচ গ্রামের জেলহক প্রামাণিকের পুত্র হাবিব (১৪) ও চন্ডিপুর গ্রামের আছমত আলীর পুত্র আহম্মাদ আলী (১৬) নামের দু'কিশোরকে গ্রেফতার করে কোর্টে সোপর্দ করে।

বৃহস্পতিবার (১২জুন) বিকাল ২টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আখতার গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের জানান, গত ৯জুন সোমবার রাত্রি পৌনে ১০টা থেকে পরদিন ১০ জুন মঙ্গলবার রাত্রি পৌনে ১টার মধ্যে সিকিবি রোস্তমিয়া আলিম মাদ্রাসার নিজ কক্ষে নৈশ প্রহরী আব্দুল গনিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা, চোয়াল, পিঠ এবং কব্জিতে দেশীয় অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে মৃতপ্রায় অবস্থায় ফেলে যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়দের সহায়তায় তাঁকে সিরাজগঞ্জ শহীদ মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরবর্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ জুন সকাল ৯টার দিকে তিনি মারা যান।ঘটনার পরের দিন,বুধবার (১১জুন) নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ভাঙ্গুড়া থানায় হত্যা মামলা (নং- ০৬/২০২৫,দঃবিঃ ৩০২/৩৪ পেনাল কোড) দায়ের করা হয়।

পাবনার পুলিশ সুপার মোরতোজা আলী খাঁনের নির্দেশনায় এবং সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আখতার এর তত্ত্বাবধানে ঘটনার রহস্য উদঘটনে সংঙ্গীয় কর্মকর্তাদের নিয়ে তদন্ত শুরু করেন, ভাঙ্গুড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) শফিকুল ইসলাম।

তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঐ দুই কিশোর অপরাধিকে গ্রেফতার করে, যারা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয় এবং তাদের আদালতে হাজির করা হলে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে।

ঘটনার নেপেথ্যে জানা যায় ,নিহত আব্দুল গনির সাথে হাবিবের পূর্বপরিচিত ও আত্মীয়সুলভ সম্পর্ক থাকায় মাঝে মাঝে হাবিব মাদ্রাসায় রাত্রী যাপন করত।

হাবিব জানত যে, ভিকটিম নিজের কাছে টাকা-পয়সা রাখতেন। সেই লোভ থেকেই বন্ধু আহম্মাদ আলীর সঙ্গে টাকা ছিনিয়ে নিতে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার পূর্ব ৯ জুন রাতে দু'জন মাদ্রাসার পাশে ফুটবল মাঠে বসে ডেন্ডি (গাম) সেবন করে এবং পরে মাদ্রাসার কক্ষে প্রবেশ করে আব্দুল গনিকে নির্মমভাবে আঘাত করে হত্যা করে।

ঘটনার পর পরই হাবিব নিহতের ছেলেকে ফোন করে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয় এবং ছেলের সাথে নিজেও ঘটনাস্থলে যায়। অপর অভিযুক্ত আহম্মাদ আলী কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত দা ও ছেনি দেশীয় অস্ত্র জব্দ করে।

এই ঘটনায় ভাঙ্গুড়াবাসীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পদক্ষেপ ঘটনার নেপথ্যে নির্মম কাহিনী বের হয়ে আসছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে