যমুনার বুক থেকে ফিরল না ছোট্ট উর্মি। সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার বার বয়লা গ্রামের সাত বছরের শিশু উর্মি খাতুন গত ২২ জুন (রোববার) দুপুরে যমুনা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়। প্রবল স্রোতের তোড়ে তলিয়ে যাওয়া শিশুটির সন্ধানে স্থানীয়রা আপ্রাণ চেষ্টা চালালেও কোনো ফল মেলেনি। পরে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল তল্লাশি চালিয়েও পরদিন পর্যন্ত উর্মির খোঁজ পাওয়া যায়নি।
একদিন পর, ২৩ জুন (সোমবার) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটসংলগ্ন যমুনা নদী থেকে একটি অজ্ঞাত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। শিশুটির ছবি পাঠানো হয় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনারুল ইসলামকে। বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেন তিনি। নিজ উদ্যোগে পাটুরিয়া নৌ-পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে, সাবেক ইউপি সদস্য সাহ আলমের সহায়তায় শিশুটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ছবি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন উর্মির বাবা উজ্জল হোসেন ও স্বজনরা।
উর্মির বাবা উজ্জল হোসেন সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর থানার সঁদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
ওসি মো. আনারুল ইসলাম বলেন, "আমি একজন পিতা। উর্মির ঘটনা আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। শুধু আইনি দায়িত্ব নয়, এক মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমি তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি।"
২৪ জুন (মঙ্গলবার) দুপুরে প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে পাটুরিয়া নৌ-পুলিশ উর্মির নিথর দেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
এনায়েতপুর থানা ও পাটুরিয়া নৌ-পুলিশের আন্তরিক সমন্বয় ও মানবিক ভূমিকায় স্থানীয়রা গভীরভাবে মুগ্ধ। বার বয়লা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শিশুটির ফেলে যাওয়া স্কুলব্যাগ, খাতা ও ইউনিফর্ম যেন আজও তাকিয়ে আছে দরজার দিকে “ফিরে আসবে আমার উর্মি...”