মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেছেন, মৌসুমের কারণে ডিমের দাম কিছুটা কমে গেছে। বিদ্যুতের দাম ও ফিডের দাম অনেক বেশি। খামারিদের ৭০ ভাগ খরচ ফিডের কারণে হয়। কাজেই ফিডের দাম কমানো জরুরি। এতে ক্ষুদ্র খামারিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বড় বড় কোম্পানী হয়তো কন্টাক্ট ফার্মিং নিয়ে কাজ করতে পারবেন। কিন্ত ক্ষুদ্র খামারিরা একেবারেই নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। তা নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি। এ ব্যাপারে সরকার অবগত রয়েছে।
তিনি বলেন, কোরবানির পরে যে চামড়াটা নেয়- তা শিল্প মন্ত্রণালয় দেখভাল করে। শিল্প মন্ত্রণালয় লবন সংগ্রহ করে। এতিমরা যেনো চামড়ার টাকা পায় এবং চামড়ার দাম বাড়ানো যায়- সে জন্য এতিম খানায় লবন দেওয়া হয়েছে। কিন্ত এ বিষয়ে কিছুটা সফল হলেও পুরোপুরি সফল হয়নি। অনেকেই চামড়ায় ঠিক মতো লবন দিতেই জানে না। এর জন্য প্রশিক্ষণ দরকার। সম্ভবত এটি শিল্প মন্ত্রণালয়েও থাকবে না। যারা চামড়া সংগ্রহ করবে তাদের ট্রেনিং দিতে হবে।
শনিবার (২৮ জুন) বিকাল ৬টার দিকে টাঙ্গাইল শহরের শাস্তিকুঞ্জ মোড় এলাকায় বুরো বাংলাদেশের আঞ্চলিক কার্যালয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ পৃথিবী ও নয়াকৃষি আন্দোলন আয়োজিত নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতকরণে করণীয় বিষয়ক ‘নিরাপদ খাদ্য সম্মেলনে’ যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, কীটনাশকের প্রচারণা দেখে ভাল কিছু মনে হলেও এটি আসলে বিষ। বিষকে কিভাবে আমরা খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহার করি! এই বিষাক্ত কীটনাশক বন্ধ করতে হলে প্রয়োজনে রাস্তায় নামবো।
তিনি বলেন, নদী-নালা, খাল-বিল ও হাওড়ে যে সব মাছ পাওয়া যায়- তা রক্ষা করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ জালের ব্যবহারের কারণে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে। এর কারণে শুধু মাছ নয়, জলজ সব প্রাণিই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যারা এসব জাল ব্যবহার করে মাছ ধরছে তাদের নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ড আটক করছে। কিন্ত যেখানে এসব জাল উৎপাদন হচ্ছে আমরা সেসব কারখানাগুলো ধরতে চাই।
তিনি আরও বলেন, বিষ দিয়ে মাছও ধরা হচ্ছে। গরু-ছাগল ঘাস খেতে পারছে না। সেখানে আগাছা নাশক ছিটিয়ে ঘাস মেরে ফেলে তা বিষাক্ত করা হচ্ছে। এ বিষাক্ত পরিবেশ থেকে আমাদের বের হতে হবে। বাংলাদেশ অনেক সুন্দর দেশ, সমৃদ্ধশালী দেশ। আমরা চাইলে এ দেশকে আরও সুখী সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত নিরাপদ খাদ্য সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক লায়ন এমএ রশীদ, বুরোর ময়মনসিংহ বিভাগের ব্যবস্থাপক ইস্তাক আহাম্মেদ, উবিনীগের পরিচালক সীমা দাশ সিমু প্রমুখ।
এ সময় বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা ও পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ পৃথিবী ও নয়াকৃষি আন্দোলনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে উপদেষ্টা টঙ্গাইল কারাগারে কয়েদিদের জন্য স্থাপিত নতুন তাঁতযন্ত্র উদ্বোধন উপলক্ষে কারাগারে যান। এ সময় তাঁকে জেল সুপার মো. শহিদুল ইসলাম স্বাগত জানান এবং টাঙ্গাইল কারাগারের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।