গাজীপুরের কাপাসিয়ায় "উপজেলা পর্যায়ে বাস্তবায়িত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের গতিশীলতা আনয়ন" শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) সকালে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কাপাসিয়া উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বাস্তবায়িত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের উপর সম্যক ধারণা প্রদান করেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ রুহুল আমিন। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এ টি এম তৌহিদুজ্জামান।
উপজেলা সহকারী সমাজসেবা অফিসার মোঃ রেহান উদ্দিনের পরিচালনায় কর্মশালায় ইউনিয়ন পর্যায়ের গঠিত দলনেতা, জনপ্রতিনিধি, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সাংবাদিক, ইমাম, ফিল্ড সুপারভাইজার সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
এসময় কর্মশালায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন কাপাসিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রবিউল ইসলাম, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন শামীম, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদ মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ, ফিল্ড সুপারভাইজার আবুল হোসেন প্রমুখ।
প্রশিক্ষণে জানানো হয়, সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে উপজেলা পর্যায়ে বাস্তবায়িত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের আওতায় সদস্যদের মাঝে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয়। ঋণ গ্রহিতাদের নিকট থেকে ৫ পার্সেন্ট সার্ভিস চার্জ আদায় করে পরবর্তীতে তাদের মধ্যেই বিতরণ করা হয়। এক বছর মেয়াদি ক্ষুদ্রঋণ পরিশোধ করতে হলেও দুই মাস পর থেকে কিস্তি শুরু হয়। সার্ভিস চার্জ আদায় না হওয়া পর্যন্ত মূলধনের টাকা উঠিয়ে নিতে পারবেন না। সার্ভিস চার্জ সমিতির সদস্যদের মূলধনে যোগ হয়। সমন্বয়হীনতার কারণে ঋণের টাকা আদায় হয় না। একজন ব্যক্তি তিন বার ঋণ নিতে পারেন। ৫০ হাজার পর্যন্ত 'ক' শ্রেণি, ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত 'খ' শ্রেণি, ৬০ থেকে তদূর্ধ্ব 'গ' শ্রেণি হিসাবে বিবেচিত হয়।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য এই ক্ষুদ্রঋণ নির্ধারিত এবং ঋণ আদায়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন। উপজেলা পর্যায়ে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট পল্লী ঋণ কার্যক্রম কমিটি আছে । প্রাথমিক পর্যায়ে গ্রাম জরিপ, দল গঠন, ১-২০ বা তদূর্ধ্ব সদস্য নিয়ে সমিতি গঠন করা হয়।
দলনেতা, সহকারী দলনেতা সহ গ্রাম কমিটিতে ১ জন সভাপতি, ১ জন সহ-সভাপতি, কোষাধ্যক্ষসহ অন্যান্যরা বিভিন্ন দল থেকে ঋণ গ্রহিতা নির্বাচন করেন । পরে তা উপজেলায় পাঠালে উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেয়।
ঋণ গ্রহিতাদের উৎসাহ দিতে অক্ষরজ্ঞান, বাড়িঘর পরিস্কার রাখা, শিশুদের শিক্ষা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সহায়তা, স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা সহ ২০টি বিষয়ের উপর জোর দেয়া হয়। সদস্যরা তাদের সুবিধা মতো সঞ্চয় জমা করবেন।
ঋণ গ্রহিতা মারা গেলে তার সম্পত্তি থেকে তা আদায় করা হয়। ক্ষুদ্রঋণ মওকুফ করার কোন সুযোগ নেই। সর্বোপরি প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের নিজ উদ্যোগে গরু, ছাগল, হাস মুরগি বা ছোট ব্যবসা সহ উৎপাদনশীল কাজে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ক্ষুদ্রঋণ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।