সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের বাজেটে নারীদের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হয় না। যেটুকু দেওয়া হয়, তার কাঠামোর মধ্যেও আবার সমস্যা থাকে। ভবন বানানোতে টাকা চলে যায়। যেটুকু বাকি থাকে, সেটুকুও ঠিকমতো বছর শেষে খরচ হয় না।
আজ সোমবার (২৬ মে) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট প্রণয়ন এবং এফএফডি-ফোর ফলাফলের অগ্রগতির বিষয়’ শীর্ষক আলোচনার সমাপনী বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ। আয়োজনে সহযোগিতা করে ‘ইউএন উইমেন’।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাজেটে নারীদের জন্য আর্থিক সংস্থান খুবই কম। যেটুকু খরচ হয়, তার মূল্যায়ন হয় না, সেটা প্রকৃতভাবে নারীদের পক্ষে গেছে কি না। ওই মূল্যায়ন করার জন্য আবার তথ্য-উপাত্ত নেই। তাই বিষয়টি চক্রাকারে নারীবৈরী একটা অর্থায়ন প্রক্রিয়ার ভেতরে ঢুকে যায় ‘
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রত্যাশা জাগিয়েছে। সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে অন্তত ন্যূনতম কিছু প্রয়োগ যদি না দেখি, তাহলে আমরা কিন্তু মনে কষ্ট পাব।’ তিনি বলেন, ‘আমি শুধু নারী কমিশনের কথা বলছি না।’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার, দুর্নীতি দমন—এমনকি সংবিধান ইত্যাদি বিষয়ে যে আলোচনা চলছে, তার ভেতরেও নারীদের বিষয়কে একটি মূলধারার বিষয় হিসেবে সংযুক্ত করতে হবে। এটা শুধু নারীর বিষয় নয়, এটা জাতীয় বিষয়। এটা শুধু উন্নয়নের বিষয় নয়, এটা ন্যায্যতারও বিষয়।’
বাজেটকে আরও বেশি ব্যবহারোপযোগী করার প্রস্তাব তুলে ধরে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘দেশের যে অর্ধেক জনসংখ্যা নারী আছে, তাদের পরিবর্তনের কথা, উন্নয়নের কথা বিবেচনায় রেখে সুনির্দিষ্ট, স্বচ্ছ ও ব্যবহারযোগ্য বাজেট দিতে হবে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য কী ধরনের আর্থিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা প্রকাশ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে লিঙ্গ প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট: সংক্ষিপ্ত পরিসর’ শীর্ষক উপস্থাপনা তুলে ধরেন ইউএন উইমেনের প্রোগ্রাম অ্যানালিস্ট নুবায়রা জেহিন। ‘লিঙ্গীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থনীতির অবস্থা’ নিয়ে উপস্থাপনা তুলে ধরেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেন দূতাবাসের ডেভেলপমেন্ট কো-অর্ডিনেশন প্রোগ্রাম পরিচালক মারিয়া স্ট্রিডসম্যান, সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ফেরদৌসী সুলতানা, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ-২) নাজমুন নাহার হামিদ, ইউএন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং প্রমুখ।