শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সরকারকে ইশরাকের হুঁশিয়ারি...

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৯ মে ২০২৫, ১৭:৩৭
আপডেট  : ২৯ মে ২০২৫, ১৭:৫৬
সরকারকে ইশরাকের হুঁশিয়ারি...
নগর ভবনে অবস্থানরত সমর্থকদের মাঝে পৌঁছে বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। ছবি: ফোকাস বাংলা

অবিলম্বে সর্বোচ্চ আদালতের রায় কার্যকর করে শপথ পড়ানোর ব্যবস্থা না করলে নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বেলা আড়াইটার দিকে নগর ভবনে অবস্থানরত নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসে তিনি সরকারের উদ্দেশে এই হুঁশিয়ারী দেন।

1

সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে সরকারের উদ্দেশে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘এই রায়ের পর অবিলম্বে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে আমার শপথ গ্রহণের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। আপনারা শপথ নিয়ে যে টালবাহানা করছেন, তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ টানা দুই সপ্তাহ নগর ভবনের সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এটি করার কোনো এখতিয়ার আপনাদের নাই।’

ইশরাক হোসেন আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষণার পরপর আপনাদের উচিত ছিল শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা। যেহেতু আগে এটা করেন নাই, এখন সর্বোচ্চ আদালতের এই নির্দেশনা আপনাদের ওপর এমনিতেই বর্তায়। যত দ্রুত সম্ভব শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবেন। অন্যথায় আপনাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতের অবমাননার অভিযোগ চলে আসবে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আইনের শাসনে বিশ্বাসী। আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু আপনারা দেখেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা এবং এর সঙ্গে জড়িত কিছু প্রশাসনের কর্মকর্তা আমাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনীত প্রার্থী ছিলাম বলে আমার প্রতি এই বৈষম্য করা হয়েছিল। আজকের রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হলো।’

ইশরাক হোসেন বলেন, ‘সরকার একজন মেয়রকে শপথ পড়াতে ব্যর্থ হয়েছে।

ভবিষ্যতে ৩০০ জন এমপিকে শপথ পড়াতে কীভাবে তারা কার্যকর উদ্যোগ নেবে? এটা নিয়ে জনমনে যথেষ্ট সন্দেহ তৈরি হয়েছে।’

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ঢাকার নগর ভবনের ভেতরের ফটকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ইশরাকের সমর্থকেরা। ইশরাককে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে বৃষ্টির মধ্যেও কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে কর্মসূচিতে ইশরাকের সমর্থকদের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের বড় একটি অংশ যুক্ত আছেন।

অবিলম্বে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে শপথের উদ্যোগ নিতে হবে বলে মন্তব্য করে

তিনি বলেন, ‘আপনারা শপথ নিয়ে যে টালবাহানা করছেন, তারই পরিপ্রেক্ষিতে টানা দুই সপ্তাহ নগর ভবনের সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এটার কোনো এখতিয়ার আপনাদের নাই। নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দেওয়ার পর আপনাদের উচিত ছিল, শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান শেষ করা। যেহেতু আগে এটা করেন নাই, এখন সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনাটা আপনাদের ওপর এমনিতেই বর্তায়। যত দ্রুত সম্ভব শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবেন। অন্যথায় আপনাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতের অবমাননার অভিযোগ চলে আসবে।’

ইশরাক নগর ভবনে আসার পর সমর্থক ও সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা তাকে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বরণ করে নেন। পরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন, বিদ্যুৎ কর্মচারী সমাজকল্যাণ সমিতি, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

নগর ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলিয়ে ১৪ মে থেকে এই আন্দোলন চলছে। মাঝখানে ৪৮ ঘণ্টার বিরতি দিয়ে আবারও তাদের কর্মসূচি শুরু হয়। আন্দোলনে নগর ভবনের সব সেবা বন্ধ রয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। সেবা নিতে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেকেই।

প্রসঙ্গত, ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা লিভ টু আপিল আজ নিষ্পত্তি করেন আপিল বিভাগ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে