সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

১৯৯৪ সালের চাকুরীচ্যুত ব্যাটালিয়ন আনসারদের পুূর্নবহালের দাবিতে আমরণ অনশন

গুরুতর অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে অন্ততঃ ৩ জন
যাযাদি রিপোর্ট
  ০৬ জুলাই ২০২৫, ২৩:০৩
আপডেট  : ০৬ জুলাই ২০২৫, ২৩:১৭
১৯৯৪ সালের চাকুরীচ্যুত ব্যাটালিয়ন আনসারদের পুূর্নবহালের দাবিতে আমরণ অনশন
খিলগাঁও আনসার সদর দপ্তরের সামনে অনশনরত চাকুরিচ্যুত আনসার সদস্যরা: ছবি- যাযাদি

উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী, চাকরি ফেরত পেতে চান ১৯৯৪ সালে বিদ্রোহের ঘটনায় চাকুরিচ্যুত আনসার সদস্যরা। ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে সংশ্লিষ্টদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন দুই হাজারের বেশি আনসার সদস্য। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে গড়িমসি করায় গত ২৯ জুন থেকে খিলগাঁও আনসার সদর দপ্তরের সামনে আমরণ অনশনে নেমেছেন তারা। এরইমধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে অন্ততঃ ৩ জন।

অনশনরত চাকুরিচ্যুত আনসার সদস্যদের ভাষ্য, আজ প্রায় ৩১ বছর ধরে তারা অনাহারে, অর্ধাহারে অমানবিক জীবন যাপন করছেন। যদি হাই কোর্টের রায় আইন সত্য হয় এবং দেশে ন্যায় বিচার থেকে থাকে তাহলে তাদের উপর কেন এত নির্মম অবিচার করা হচ্ছে। তাদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও কেন তাদের রাস্তায় পড়ে থাকতে হচ্ছে।

খিলগাঁও আনসার সদর দপ্তরের সামনে অনশনরত চাকরিচ্যুত আনসার সদস্যরা বলেন, সরকার যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আনসার বিদ্রোহের কারণে চাকরি হারানোআনসার সদস্যরা দোষী সাব্যস্ত না হলে তাদেরকে ব্যাটালিয়ন আনসারে ফেরানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে বলে এক রায়ে অবজারবেশন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। রায়টি প্রকাশ হয়েছে ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি।

তারা বলেন, ১৯৯৪ সালে সংঘটিত আনসার বিদ্রোহের পর চাকরি হারানো দুই হাজারের বেশি সংখ্যক আনসার সদস্যের মধ্যে যাদের বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে, তাদের পুনর্বহাল করতে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন পর্যবেক্ষণই দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।

আইনজীবীদের দেওয়া তথ্য মতে, আনসারদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে ১৯৯৪ সালে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। পরে তা বিদ্রোহে রূপ ধারণ করে। এ ঘটনায় ২ হাজার ৪৯৬ জন আনসারকে গ্রেফতার করা হয়। বিদ্রোহের ঘটনায় মামলার পর বিভিন্ন সময় তারা খালাস পান। এর মধ্যে কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়। এতে ২ হাজার ৪৯৬ জন আনসার সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরি হারানো প্রায় ২ হাজার সদস্যের করা পৃথক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে হাইকোর্টও শর্ত সাপেক্ষে তাদের পুনর্বহালের নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন। হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আনসার-ভিডিপির মহাপরিচালক ও রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক আপিল ও লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে ২০২২ সালের ২ আগস্ট রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। রায়টি লিখেছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

উক্ত রায়ের আলোকে আমাদের অসহনীয় অমানবিক জীবন থেকে মুক্তি ও অসহায় সন্তানদের নিয়ে সামাজিকভাবে বেঁচে থাকার অধিকার পেতে চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য বর্তমানে চলমান সরকারের আশু হস্তক্ষেপ করেন তারা।

তারা বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে আমরাও অংশীদার হতে চাই। সেজন্য মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়কে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বিনীত আহ্বান জানাই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে