শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

কলারোয়ায় ড্রাগন চাষে দৃষ্টান্ত বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ারের

আরিফ মাহমুদ, কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:৫৩
কলারোয়ায় ড্রাগন চাষে দৃষ্টান্ত বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ারের

বিষমুক্ত ড্রাগন ফল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন বুয়েট থেকে পাশ করা একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। সাতক্ষীরার কলারোয়ায় শাহিনুর রহমান নামের ওই প্রকৌশলী ২০বিঘা বিলের জমিতে ড্রাগন ফল চাষ ও উৎপাদন করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তৈরি করেছেন অনেকের কর্মসংস্থানও।

শাহিনুর রহমান উপজেলার যুগিখালী ইউনিয়নের তরুলিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শওকত আলীর ছেলে। শাহিনুর রহমান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে পাস করে চাকরির পেছনে ছোটেননি তিনি। ঢাকার শ্যামলীতে মিডিয়া সফটওয়ার লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠান দাড় করেছেন। তিনি সেই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থপনা পরিচালক। এর পাশাপাশি গ্রামের বাড়ির এলাকায় প্রথমে ১০বিঘা জমিতে মাটি ভরাট করে ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেন। ফলনও ভাল হয়। এরপর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি আরো ১০বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেন। বর্তমানে সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত তার ৩টি বাগানে চলতি মৌসুমেও গাছপাকা বিষমুক্ত এই ফল ২০০ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকরি ব্যবসায়ীরা। আর পাইকরী ব্যবসায়ীরা সেই ফল পাঠিয়ে দিচ্ছেন দেশের বিভিন্ন বাজার-এলাকায়। এছাড়াও ‘ফলের আড়ৎ’ নামে শাহিনুর রহমানের একটি ফেসবুক পেইজ রয়েছে, যেখান থেকে ফলের অর্ডার ও বিপনন করা হয়।

পুত্রের এমনই উদ্যোক্তরূপের গল্প শুনিয়ে তার পিতা শওকত আলী জানান, ‘ছেলে বুয়েট থেকে ২০১৩ সালে সিএসই বিভাগে লেখাপড়া শেষ করেন। চাকরির পেছনে না ঘুরে সফটওয়্যার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সেখানে ৩২জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। আর গ্রামের বাড়িতে ড্রাগন ফলের প্রকল্পে নিয়মিত ভাবে ১০/১২ জন কাজ করেন। এখন সে সফল একজন ব্যবসায়ী।’

শাহিনুর রহমান বলেন, ‘তিনি বেশিরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করলেও সেখান থেকে সিসি টিভির মাধ্যমে ড্রাগন প্রকল্প পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশনা প্রদান করে থাকেন। ড্রাগন ফলের দাম ও বাজার ভাল হওয়ায় প্রকল্পটি দেখভাল করেন তার পিতা। ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা জেলায় এটিই সবচেয়ে বড় ড্রাগন উৎপাদন প্রকল্প হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। এই সফলতা দেখে অনেকেই ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন, তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থান।’

২০বিঘা জমির ড্রাগন বাগানের পরিধি আরো বাড়াতে চান এবং এই ফল বিদেশেও রফতানি করতে চান শাহিনুর রহমান।

কলারোয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সুভাংশু শেখর দাস জানান, ‘উপজেলায় ১২ জন চাষি ৩০ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করছেন। ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা ও মেহেরপুর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালকসহ কৃষি বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের টিম শাহিনুর রহমানের ড্রাগন ফলের বাগান পরিদর্শন করেছেন।’

কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুলী বিশ্বাস জানান, ‘একটা স্বপ্ন ও একটা সঠিক সিদ্ধান্ত সমাজের চিত্র পাল্টে দিতে পারে। তরুণ উদ্যোক্তা শাহিনুর যার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার ড্রাগন বাগান নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে।’

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে