মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তরুণদের কর্মসংস্থানে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
  ১৯ মে ২০২৫, ১৫:০৭
তরুণদের কর্মসংস্থানে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ
ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তরুণদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ১০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনায় এ তহবিল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

গত ১৭ মে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত অর্থ বিভাগের বৈঠকে ড. ইউনূস বেকার তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে এই বিশেষ তহবিল গঠনের নির্দেশ দেন।

1

এছাড়া বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়ন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত শক্তিশালীকরণ ও নারী অধিকার রক্ষাসহ নানা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন তিনি।

অর্থ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রধান উপদেষ্টা চান তরুণেরা ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে উঠুক। অনেক তরুণ অর্থের অভাবে কিছু করতে পারছে না, চাকরিও পাচ্ছে না। তারা যেন সহজ শর্তে সহায়তা পায়, সেজন্য ছোট পরিসরে অর্থায়নের নীতিমালা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, "প্রাথমিকভাবে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হবে। পরবর্তীতে এই তহবিল থেকে কারা, কী উদ্দেশ্যে, কতদিনের জন্য এবং কত সুদে অর্থ পাবে, তা নির্ধারণে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।"

এছাড়া, দরিদ্র জনগোষ্ঠীসহ সার্বিকভাবে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি, শোভন কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবেশ উন্নয়নে বাজেটে নির্দেশনা থাকবে। শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও খেলাধুলার পরিবেশ নিশ্চিত করতেও বিশেষ বরাদ্দ থাকবে। তবে এগুলোর জন্য আলাদা খাত না রেখে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ আগামী ২ জুন বাজেট উপস্থাপন করবেন। সংসদ কার্যকর না থাকায় বাজেট বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচারিত হবে।

প্রথানুযায়ী বাজেট চূড়ান্ত করার আগে সরকারপ্রধানের সঙ্গে অর্থ বিভাগের বৈঠক হয়। শনিবারের বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা, পরিকল্পনা উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরীসহ কয়েকজন সচিব উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহ বৃদ্ধি ও কিছু সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাজেটে আগামী অর্থবছরের শেষে মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে।

অহেতুক বরাদ্দ ও ব্যয় পরিহারের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। সরকার এবার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চেয়ে স্থিতিশীলতায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আগামী অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৫.৫ শতাংশ।

জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ৭.৯০ লাখ কোটি টাকা। এরমধ্যে ২.৩০ লাখ কোটি টাকা উন্নয়ন এবং ৫.৬০ লাখ কোটি টাকা অনুন্নয়ন ব্যয়।

এই ব্যয় নির্বাহে ৫.৬৪ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট থেকে আদায় হবে ৪.৯৯ লাখ কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে ১৯ হাজার কোটি ও কর বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) থেকে ৪৬ হাজার কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে