ইরানের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইসরায়েল প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ কোটি ডলার খরচ করছে। এই বিপুল ব্যয় সামরিক অভিযানের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
প্রতিদিনের খরচের সবচেয়ে বড় অংশজুড়ে রয়েছে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার ব্যয়। ইসরায়েলের ডেভিড’স স্লিং ও অ্যারো ৩ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর একেকটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে খরচ হচ্ছে ৭ লাখ থেকে ৪০ লাখ ডলার পর্যন্ত। বিগত কয়েক দিনে ইরান থেকে ৪০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে, যার জবাবে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বহুবার সক্রিয় হয়েছে।
ইসরায়েলের অ্যারন ইন্সটিটিউট ফর ইকোনমিক পলিসির হিসাব অনুযায়ী, এক মাস ধরে যুদ্ধ চললে মোট খরচ ১২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
অর্থনীতিবিদ জভি একস্টেইন বলেন, ‘গাজা বা হিজবুল্লাহর সঙ্গে আগের যেকোনো সংঘাতের তুলনায় এই যুদ্ধ অনেক বেশি ব্যয়বহুল। প্রতিরক্ষামূলক ও আক্রমণাত্মক গোলাবারুদই সবচেয়ে বড় খরচ।’
এই উচ্চ খরচ যুদ্ধের সময়সীমা নিয়ে রাজনৈতিক ও সামরিক মহলে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখনো যুদ্ধ থামানোর কোনো ইঙ্গিত দেননি। বরং তার লক্ষ্য—ইরানের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে স্থবির করে দেয়া।
অর্থনৈতিকভাবে যুদ্ধের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। কিছু ক্ষেত্রে মূল্য বাড়লেও তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ইসরায়েলি বাজার। তবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৫,০০০ এরও বেশি বেসামরিক লোককে সরিয়ে নিতে হয়েছে, শত শত ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার পুনর্নির্মাণে ৪০ কোটি ডলারের বেশি খরচ হতে পারে বলে প্রকৌশলীদের ধারণা।
ইরানের পাল্টা জবাবে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো খাতেও কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর কারনিট ফ্লুগ বলেন, ‘যুদ্ধ যদি এক সপ্তাহ চলে, সেটা একরকম। কিন্তু দুই সপ্তাহ বা এক মাস চললে তার অর্থনৈতিক অভিঘাত হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন।’