শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে হলত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
শনিবার কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যক্ষ কামরুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন ও হোস্টেলের অবকাঠামোগত ‘দুরাবস্থা’ নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসছেন। তাতে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তা নিরসনে শনিবার অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল একমত পোষণ করেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে তারা নিয়মিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
দৃশ্যমান ফল প্রাপ্তির সময়সীমা নিয়ে শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থান রয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ ইতোমধ্যে ডা. ফজলে রাব্বি ছাত্রাবাসের মূল ভবনের চতুর্থ তলাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। বিকল্প আবাসন নিশ্চিত করা হলেও শিক্ষার্থীদের ‘অসহযোগিতার’ কারণে তা খালি করা যায়নি।
এ পরিস্থিতি অবস্থানরতদের জীবনের জন্য ‘অত্যন্ত হুমকিস্বরূপ’ বর্ণনা করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর মধ্যে নতুন ব্যাচ কে-৮২ ‘স্বপ্রণোদিত’ হয়ে অথবা ‘প্ররোচিত’ হয়ে তাদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওরিয়েন্টেশন প্রগ্রাম বয়কট করেছে, যা ঢাকা মেডিকেল কলেজের জন্য একটি ‘কালো অধ্যায়’। ফলে কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
চলমান অচলাবস্থা নিরসনের জন্য রোববার থেকে কলেজের এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ‘অনির্দিষ্টকালের’ জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে হোস্টেল ত্যাগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী এবং বিদেশি শিক্ষার্থীরা এই নির্দেশনার আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ কামরুল আলম।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ: নিরাপদ ক্যাম্পাস ও আবাসনসহ পাঁচ দফা দাবির আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষার্থীরা।
তাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণের জন্য দ্রুত বাজেট পাস করতে হবে।
২. ছাত্রাবাস নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নতুন একাডেমিক ভবনের জন্য আলাদা বাজেট পাস করতে হবে।
৪. আবাসন ও অ্যাকাডেমিক ভবনের বাজেট পৃথকভাবে অনুমোদন করতে হবে ও দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. সব প্রকল্প ও কার্যক্রমের অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঠিক করতে হবে।
ডা. ফজলে রাব্বি ছাত্রবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী শামীম আহমেদ বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে আবাসনজনিত নানা সংকটে ভুগছি, চারটা হলের একটাও বসবাসের উপযোগী না।
“কয়েকদিন আগেও আমাদের হলের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে। আমরা সেখানে থাকতে নিরাপদবোধ করছি না।