শুক্রবার (২১ জুন) সিরডাপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি আয়োজিত 'ডিবেটিং বাজেট অ্যান্ড বিয়ন্ড' শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'আমরা আগে এলএনজি কিনতাম ১৬-১৭ ডলারে। বকেয়া পরিশোধের কারণে সেটি এখন ১২-১৩ ডলারে নেমেছে।'
ছাদে সৌর প্যানেল বসিয়ে বেসরকারি খাত থেকেও অন্তত ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অপচয়, দুর্নীতি ও অদক্ষতাকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, 'পানির উৎস থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে কেবল একজন মন্ত্রীর সুবিধার জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনে রাস্তা করা হয়েছে, অব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্রীয় অর্থ নষ্ট হয়েছে।'
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৬৬ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'এটা চলতে পারে না। আমরা জনগণের কাছ থেকে যে দাম নিচ্ছি, তার চেয়ে অনেক বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে।'
মাল্টিমডেল ইন্টিগ্রেটেড প্ল্যান প্রস্তুতের কথা উল্লেখ করে ফাওজুল কবির বলেন, 'কোথায় রাস্তা করা হবে, তা এখন নির্ধারণ করা হচ্ছে। আগে বিনা প্রয়োজনেই রাস্তা বানানো হয়েছে। আমাদের নদীপথ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, সেগুলো সচল করার চেষ্টা চলছে।'
অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমরা আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগ না দিয়ে, ব্যবসায়িক সুবিধা না দিয়ে এমন একটি দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চাই, যা ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক উদাহরণ হবে।'
সেমিনারে ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টু বলেন, 'বাজেট আসলে ভবিষ্যতের জন্য একটি নীতিবিবৃতি। গত ১০-১৫ বছরে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও আমলাতন্ত্রের সমন্বয়ে দেশের সাংবিধানিকসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠান করায়ত্ব করা হয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারে মনোযোগ দিচ্ছে, তাদের এ বিষয়গুলোতেও নজর দেওয়া দরকার।'
তিনি বলেন, 'ভ্যাট বাড়ানো হলেও প্রত্যক্ষ কর বাড়াতে পারছি না। তাহলে সুষম বণ্টন হবে কীভাবে? মুদ্রানীতিতে সুদের হার বাড়িয়ে প্রাইভেট সেক্টরে সংকোচন করা হচ্ছে, অথচ সরকারের খরচে কোনো সংকোচন দেখা যাচ্ছে না। ব্যাংকে যে টাকা জমা হচ্ছে, তার বড় অংশ সরকার ধার হিসেবে নিচ্ছে। তাহলে অর্থনীতি কীভাবে চলবে?'
আওয়াল মিন্টু আরও বলেন, "বিনিয়োগের একটি পূর্বশর্ত হলো সামাজিক শৃঙ্খলা ও মূলধন। টাকা-পয়সার মামলা নিষ্পত্তি হতে ২০ বছর লাগলে কেউ বিনিয়োগে আগ্রহী হবে না।"