রোববার, ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

​​​​​​​চুয়েটের টিএসসি উদ্বোধনে অবহেলা, নির্মাণ ২০১৯ সালে

চুয়েট প্রতিনিধি
  ২৬ মে ২০২২, ২০:৩০
​​​​​​​চুয়েটের টিএসসি উদ্বোধনে অবহেলা, নির্মাণ ২০১৯ সালে
​​​​​​​চুয়েটের টিএসসি উদ্বোধনে অবহেলা, নির্মাণ ২০১৯ সালে

1

চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ছাত্র শিক্ষক মিলনায়তনের (টিএসসি) নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু বাজেট সংকট, টিএসসির যাবতীয় সরঞ্জাম-আসবাবপত্রের ব্যবস্থা না হওয়া ইত্যাদি জটিলতায় কার্যক্রম শুরু করতে ব্যর্থ হয় চুয়েট প্রশাসন।

পরবর্তীতে করোনা মহামারী পেরিয়ে প্রায় দেড় বছর পরে ধাপে ধাপে স্থগিত কার্যক্রমগুলো পুরোদমে শুরু করা হয় যাতে অতি শীঘ্রই তা ছাত্র শিক্ষকসহ সকলের জন্য উন্মুক্ত করা যায়। কিন্ত এরপরও প্রশাসন ব্যর্থ। টিএসসিতে কার্যক্রম শুরুর প্রেক্ষিতে ছাত্র সংগঠনগুলো ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করলেও প্রতিবার আশ্বাসেই ভাসিয়ে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

করোনা মহামারীর মাঝামাঝি সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাদ রেখেই ছোট পরিসরে টিএসসি উদ্বোধনের খবর থাকলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে এর যাত্রা শুরুই হয় নি। বিগত ২ বছরে টিএসসিতে উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম আয়োজনের তালিকায় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা, ভর্তি কার্যক্রম, কয়েকটি সভা সমাবেশ এবং চলতি বছরে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ভবনটি এখনো তালাবদ্ধ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্র মতে, চুয়েটের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০০৭ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মাণের জন্য প্রথম ধাপে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সে অর্থ দিয়ে ভবনের ভিত্তিকাঠামোটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এরপর প্রকল্পের জন্য আর কোনো বরাদ্দ না আসায় নির্মাণকাজ আর এগোয় নি।

এরপর কয়েক বছর কাজ বন্ধ থাকে । পর্যাপ্ত বাজেট এবং ব্যবস্থাপনার অভাবে টিএসসির নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার বিষয়টি সে সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করে।

এরপর আংশিক বাজেট এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন চুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অর্থায়নে ভবনটির নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু হয়। ভবনটির নির্মাণকাজ একতলা পর্যন্ত সম্পন্ন করার জন্য সংগঠনটি প্রায় অর্ধ কোটি সমপরিমাণ টাকা অর্থায়ন করে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, প্রথম ধাপে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় প্রকল্পটি শুরু হয়। কিন্তু ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা পরিমাণ কাজ শেষ হওয়ার পর অধিদপ্তর থেকে আর কোনো টাকা আসেনি। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরকে প্রকল্পটি হস্তান্তর করা হয়। এরপর নানান জটিলতা পর করে ২০১৯ সালের শুরু দিকে টিএসসির নির্মাণ কাজ শেষ হয়।এরপর ভবনটি কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে চুয়েটের প্রকৌশল দপ্তর।

টিএসসি নির্মাণ কাজ শুরু থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত পেরিয়েছে প্রায় এক দশকেরও বেশি সময়। নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ২ বছরের বেশি সময় আগে। কিন্ত এখনও তা চালু করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরাও জানেন না কেন চালু করা হচ্ছে না টিএসসির কার্যক্রম।

টিএসসি চালু প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ছাত্রকল্যাণ পরিষদের পরিচালক অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম স্থাপনাটির কার্যক্রম খুব শীঘ্রই চালু করার বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বলেন, "কারিগরি অনেক সমস্যা সমাধান করেছি আমরা। খুব শীঘ্রই টিএসসি চালু করা নিয়ে ছাত্রকল্যাণ পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে। কিছু নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে। সেটি শেষ হওয়ার পর আমরা পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য পদক্ষেপ নিবো।"

এদিকে কবে নাগাত টিএসসি চালু হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি টিএসসি চালুর সুস্পষ্ট কোনো সময় উল্লেখ করতে পারেননি।

উল্লেখ্য, ১৭ হাজার বর্গফুট আয়তনের এ ভবন নির্মাণে মোট ব্যয় হয় প্রায় ১১ কোটি টাকা। পূর্ব পাশের তিন তলা অংশের ১ম তলায় শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাফেটেরিয়া, ২য় তলায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ক্যাফেটেরিয়া ও ৩য় তলায় কনফারেন্স কর্ণার।

পশ্চিম পাশের চার তলা অংশে নিচ তলায় থাকবে স্টেশনারি দোকান। ২য় তলা বরাদ্দ হয়েছে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের নতুন কার্যালয়। ৩য় তলায় অবস্থিত কক্ষগুলোতে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন গুলোর অফিস হিসেবে বরাদ্দের প্রস্তুতি চলছে। ৪র্থ তলায় থাকছে চুয়েট মেডিকেল সহায়তা কেন্দ্র এবং এলামনাই এ্যাসোসিয়েশন চুয়েট' র দপ্তর।

যাযাদি / এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে