শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিক্ষা ও গবেষণায় দেশসেরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

শিহাব উদ্দিন, জাবি
  ০২ মে ২০২৪, ১৩:১৯
-ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই)’ সম্প্রতি এশিয়া মহাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাংকিং তালিকা প্রকাশ করেছে। শিক্ষা ও গবেষণার মান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারী অনুপাত, সাইটেশন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীসহ ১৮টি পারফরম্যান্স সূচকের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ের এ তালিকায় বাংলাদেশের মধ্যে সেরা হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

এছাড়াও জাবির সাথে যৌথভাবে সেরা হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। এশিয়া মহাদেশের ৩১টি দেশের মোট ৭৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এবারের র‌্যাংকিং তালিকা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

প্রকাশিত তালিকায় এশিয়া মহাদেশের মধ্যে টানা পঞ্চমবারের মতো প্রথম অবস্থান ধরে রেখেছে চীনের শিংহুয়া এবং দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পিকিং ইউনিভার্সিটি। এছাড়াও এবারে তৃতীয় অবস্থানে আছে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর। সেরা দশ ইউনিভার্সিটির মধ্যে রয়েছে চীনের ৫টি, হংকং ও সিঙ্গাপুরের ২টি করে এবং জাপানের একটি। তালিকায় প্রথম ৩০০টির মধ্যে দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। তবে পরবর্তী ৩০০টির মধ্যে দেশের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে।

এ বছর ৩০১ থেকে ৩৫০ র‌্যাংকিংয়ের মধ্যে রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। ৩৫১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। তালিকার ৪০১-৫০০ এর মধ্যে রয়েছে অবস্থান করছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া ৫০১ থেকে ৬০০ এর মধ্যে রয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এ বছর দেশের মধ্যে শীর্ষে থাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর যথাক্রমে শিক্ষায় ২৮ দশমিক ৯, গবেষণার পরিবেশে ১০ দশমিক ৯, গবেষণার মানে ৬৩ দশমিক ০১, শিল্পে ১৯ দশমিক ৫ এবং আন্তর্জাতিক আউটলুকে ৪৯ দশমিক ৭।

এদিকে র‌্যাংকিংয়ে দেশসেরা হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং স্কলার ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক র‍্যাকিংয়ে দেশসেরা হওয়া আমাদের জন্য বড় পাওয়া। গতবারের ন্যায় এবারও র‍্যাংকিংয়ে গৌরব অর্জন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক প্রচেষ্টার ফল। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য বিদেশি স্কলারদেরকে শিক্ষাকাজে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মানের গবেষকদেরকে ভিজিটিং ফেলো হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে শিক্ষার মান আরও বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি বিদেশি শিক্ষার্থীদেরকে ভর্তির সুযোগ দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। গবেষণা সেল গঠনের মাধ্যমে পারস্পরিক জ্ঞান আদান-প্রদানের ভিত্তিতে তরুণ গবেষক তৈরি করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণা প্রকাশনার জন্য ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রতিষ্ঠাও এখন সময়ের দাবি।

ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির পরিচালক অধ্যাপক এম শামীম কায়সার বলেন, আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে অবস্থান ভালো করার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার ইম্প্যাক্ট খুবই ভালো। সম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী শিক্ষক নিয়োগের একটি নীতিমালা পাশ হয়েছে। আমরা এশিয়াতে ভালোর দিকে যাচ্ছি। পরবর্তী ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিংয়ে জাবি আরও ভালোর দিকে যাবে বলে আশা রাখি।

এবছর এশিয়া মহাদেশের র‌্যাংকিং তালিকায় বাংলাদেশের মোট ২১টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং মান প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে, গতবছর টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) প্রকাশিত আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিং তালিকায়ও শিক্ষা ও গবেষণায় দেশসেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে