ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্য খুন হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। একইসঙ্গে ঢাবি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি সাম্য হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার বুধবার (১৪ মে) এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান।
তারা বলেন, দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য ঢাবির স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক। চব্বিশের ফ্যাসিবাদী বিরোধী ও শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রামে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। যে ছেলেটি স্বপ্ন দেখেছিল পরিবর্তনের, যে লড়াই করেছিল মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য- গণঅভ্যুত্থানের সেই সম্মুখযোদ্ধা সাম্যকেই তার নিজের ক্যাম্পাসে প্রাণ দিতে হলো! এ কেমন দেশ বানাচ্ছে শাসকেরা? কিভাবে শোধ হবে এই রক্তের দায়, জীবনের মূল্য? আমরা অবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তার চাই, বিচার চাই, জবাবদিহিতা চাই। ব্যর্থ প্রশাসন নয়, আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস ও সুরক্ষিত বাংলাদেশ চাই।
ঢাবি সাদা দলের নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি যে, গোটা দেশের মানুষ যখন দেশে একটি জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার তখন ঢাবি ক্যাম্পাসের মতো একটি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে ছুরিকাঘাতে খুন করার ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত হতে পারে। কেননা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি অপরাধ ও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়। অতীতেও বিভিন্ন সময় এ ধরণের ঘটনা ঘটে এবং সেগুলোর কোনো দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি। ফলে একের পর এক খুনের ঘটনা আমাদেরকে বিচলিত ও উদ্বিগ্ন করে তোলে।
তারা আরও বলেন, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর সারা বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে খুনের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে বিএনপি ও জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীদের টার্গেট করা হচ্ছে বলে খবরে জানা যাচ্ছে। অথচ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সবার প্রত্যাশা ছিল ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হবে। কিন্তু সেই সব ঘটনার আদৌ কোনো অগ্রগতি এখনো দৃশ্যমান নয়।
আমরা ঢাবি সাদা দলের পক্ষে দাবি জানাচ্ছি যে, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্যকে হত্যাকারীদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করে আইনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে ঢাবি প্রশাসনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা জোরদারে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। সেইসঙ্গে নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য এর পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব সরকারিভাবে বহনের দাবি জানাই আমরা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত মধ্যরাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে নিহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য।
যাযাদি/ এসএম