সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ঢাবিতে তদন্ত কমিটিকে চাপে না রাখলে অভিযোগের তদন্ত হয় না

ঢাবি প্রতিনিধি
  ০৯ মে ২০২৪, ২০:২০
ছবি-সংগৃহিত

আন্দোলনের মাধ্যমে তদন্ত কমিটি চাপে না রাখলে অভিযোগের তদন্ত হয় না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। দীর্ঘদিন ধরেই এই রকম সংস্কৃতি চলে আসছে ঢাবিতে।ধারাবাহিক আন্দোলনের কারণে মাত্র তিন মাসের কম সময়ে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ঢাবির গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নাদির জুনাইদের শাস্তি হলেও কয়েকটি ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গঠিত 'তদন্ত কমিটি' ৬ মাস কিংবা ৬ বছর পরেও তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারে নি! ফলে 'বিচারহীনতার সংস্কৃতি' তৈরি হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

৬ বছরে শত চেষ্টা করেও তদন্ত রিপোর্ট পায়নি মুহসীন হলের নির্যাতিত ছাত্র জালাল: ঐতিহাসিক কোটা সংস্কারের সময় নিউজ করার কারণে ২০১৮ সালের ৪ মার্চ দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্র এবং 'জাতীয় অর্থনীতি' পত্রিকার তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জালাল আহমদ কে হলের ৩৫১ নাম্বার রুম থেকে মারধর করে জোরপূর্বক বের দিয়েছিল ছাত্রলীগ নেতা তারেক হাসান নির্ঝর এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানীর সাঙ্গপাঙ্গরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জালাল তার নিজের ফেসবুক আইডিতে 'হাইকোর্টে রিট' করবে এই মর্মে পোস্ট দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক ডঃ একেএম গোলাম রব্বানী তাঁর কাছে অভিযোগ দিলে 'তদন্ত কমিটি' গঠন করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।তাই প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীর কথায় 'বিশ্বাস' করে ২০১৮ সালের ৫ মার্চ প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দেন জালাল।

প্রক্টর অফিস থেকে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের তৎকালীন প্রভোস্ট অধ্যাপক ডঃ নিজামুল হক ভূঁইয়ার কাছে সেই আবেদন ফরোয়ার্ড করে দেয়া হলে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।তদন্ত কমিটি ঐ বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহে জালাল সহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য রেকর্ড করেছিলেন। তদন্ত কমিটির প্রধান হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক একেএম ইফতেখারুল ইসলাম 'তদন্ত রিপোর্ট' হল প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন বলে বার বার দাবি করেন।

কিন্তু হল প্রশাসন বিষয়টি অস্বীকার করেন। আজ পর্যন্ত বার বার লিখিতভাবে আবেদন করলেও কোন তদন্ত রিপোর্ট পায় নি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী । এমনকি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। কথিত আছে যে, তদন্ত কমিটির প্রধান ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক একেএম ইফতেখারুল ইসলাম ছাত্রলীগের সাথে যোগসাজশে জালাল এর তদন্ত 'ধামাচাপা' দেওয়ার বিনিময়ে 'বঙ্গবন্ধু স্কলারশিপ' নিয়ে এখন লন্ডনে অবস্থানরত করছেন। সম্প্রতি তিনি ছুটিতে দেশে আসলে জালাল তাঁর কাছে তদন্ত রিপোর্ট চাইলে তিনি জানান কিসের তদন্ত রিপোর্ট? আমি এসব কিছুই জানি না!

তাই দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে তদন্ত কমিটির প্রধান একেএম ইফতেখারুল ইসলাম , হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের তৎকালীন প্রভোস্ট অধ্যাপক ডঃ মোঃ নিজামুল হক এবং বর্তমান প্রভোস্ট অধ্যাপক ডঃ মোঃ মাসুদুর রহমান সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান এবং বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ডক্টর এএসএম মাকসুদ কামাল এর নিকট ডাকযোগে আবেদন করলেও এখনো ন্যায় বিচার পাননি তিনি।

একাডেমিক স্বার্থে জালাল এতো দিন ধরে ছাড় দিলেও অনার্সের ফলাফল সমন্বয় করার পর তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। প্রয়োজনে ন্যায় বিচার পেতে উচ্চ আদালতে 'রিট' করবেন বলে জানান তিনি।

উইমেন এন্ড জেণ্ডার স্টাডিজ বিভাগের নিপীড়িত ছাত্রী ৬ মাসেও তদন্ত কমিটি রিপোর্ট পায়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেণ্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অমিয় সৃজন সাম্য'র বিরুদ্ধে একই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন ও প্রতারণার অভিযোগ তদন্তে অগ্রগতি নেই ৬ /৭ মাস ধরে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অমিয় সৃজন সাম্য'র বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী যৌন নিপীড়ন ও প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে গত ৮ অক্টোবর (২০২৩) তারিখে বিভাগের চেয়ারপার্সনের বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগপত্রে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, অমিয় সৃজন সাম্য তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক শুরু করেন।

পরবর্তীতে এই সম্পর্কের ভিত্তিতে তার অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাকে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করে। এই ঘটনায় অভিযোগকারী ভেঙে পড়লে অভিযুক্ত শিক্ষক বারবার বিয়ের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের সম্পর্ক চলাকালীন সময়েই ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অভিযুক্ত শিক্ষক গোপনে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেন।

অভিযোগকারী শিক্ষার্থী একইসঙ্গে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. মোঃ আখতারুজ্জামানের নিকট অভিযোগ পত্রের অনুলিপি জমা দেন।

এদিকে বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানার কাছে অভিযোগটা আসার পর তিনি তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বরাবর অভিযোগটি ফরওয়ার্ড করে দেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি (ঘটনা অনুসন্ধান কমিটি) গঠন করেছিলেন তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। নবাগত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল নভেম্বরের শুরুতে দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি মৌখিকভাবে অবহিত করেন ওই শিক্ষার্থী। এ বিষয়টি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন তদরকি করছেন বলেও উপাচার্য ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আশ্বস্ত করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, “আমি ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে অভিযোগ করার পর দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। ফ্যাক্টচেকিংয়ের পর থেকে চলমান তদন্ত প্রক্রিয়া যেন থেমে আছে। বিচারে বিলম্ব হওয়ার পেছনে কি কারণ থাকতে পারে সে বিষয়ে আমি অবগত না। দ্রুততম সময়ে আমি এই অভিযোগের সমাধান চাই"।

গত ২৩ মার্চ মারা যান সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডক্টর জিয়া রহমান।মারা যাওয়ার আগে এই বিষয়ে ঘটনা অনুসন্ধান কমিটির প্রধান সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. জিয়া রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছিলেন, “আমরা ইতোমধ্যেই ঘটনায় অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী উভয়ের বক্তব্য নিয়েছি। কমিটির এক সদস্য বিদেশে ছিলেন বিধায় তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে দেরি হচ্ছে"।

অধ্যাপক ডক্টর জিয়া রহমানের মৃত্যুর পর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রাশেদা ইরশাদ নাসির। তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন , "ভর্তি পরীক্ষার ভাইভা বোর্ডে ব্যস্ত সময় পার করছি। ফ্রি হলে আগামী সপ্তাহে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারবো"।

বিভাগের শিক্ষার্থী উপদেষ্টা অমিয় সৃজন সাম্য কর্তৃক পক্ষপাতমূলক আচরণের বিচারের দাবিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর (২০২৩) তারিখ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিভাগের কয়েকজন পুরুষ শিক্ষার্থী। তারা আরও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থী উপদেষ্টা অমিয় সৃজন সাম্য কর্তৃক স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ বিভাগের ছেলেদের জন্য শিক্ষার পরিবেশ হুমকিজনক করে তুলছে ।তিনি ক্লাস গ্রহণে অনিয়মিত এবং শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে উদাসীন বলেও জানা গেছে।

শুধুমাত্র হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল কিংবা উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ঘটনা ই নয়, নানামুখী তৎপরতা এবং চাপ না থাকলে এই রকম শত শত ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটির অবহেলার কারণে 'ন্যায় বিচার' হারিয়ে যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু বিল্লাহ একই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কে এম সাইফুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ দিয়েছিলেন । কিন্তু একটি অভিযোগেরও তদন্ত হয়নি। সাবেক ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ভাষা ইনস্টিটিউট এর অধ্যাপক শামীম বানুকে দিয়ে একটি অভিযোগ তদন্ত করিয়েছেন কিন্ত আরেফিন সিদ্দিকের বিদায়ের পরে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান ভিসি হয়ে সেটিও চাপা দিয়ে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যাপক আবু বিল্লাহ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত না হলেও গণমাধ্যম কর্মীদের সোচ্চার ভূমিকা এবং ধারাবাহিক আন্দোলনের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ঘটনায় তদন্ত কমিটি দ্রুত সময়ে 'তদন্ত রিপোর্ট' দিয়েছে।ফলে কয়েকজন শিক্ষক শাস্তি পেয়েছেন। তবে এসব শিক্ষক 'বিরোধী' মতের এবং শিক্ষক সমিতির রাজনীতিতে 'বিরোধী' গ্রুপের বলে জানা গেছে।

শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের মুখে অল্প সময়ে নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট জমা ও শাস্তি :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)'র গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাইদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের'একনিষ্ঠ' সমর্থক ছিলেন।২০১৭ সালের জুলাই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে তৎকালীন ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং বর্তমান ভিসি ডক্টর এ এস এম মাসুদ কামাল সমর্থিত প্রার্থীদের দুইটি পৃথক প্যানেল জমা দেওয়া হয়।

রহস্যজনক কারণে মাকসুদ কামাল সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে লেগে থাকেন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল।এক পর্যায়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আদেশে বিদায় নিতে হয়েছে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক কে ।ভিসি পদ থেকে বিদায় নিলেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক কে 'সঙ্গ' দিতেন অধ্যাপক নাদির জুনাইদ।

নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলে একই বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী এ বছর ১০ ফেব্রুয়ারি প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়ে মানববন্ধন করে বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এতে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক ইন্ধন দিয়েছে এজন্যই যে নাদির জুনাইদ যাতে বিভাগের পরবর্তী চেয়ারম্যান পদে আসতে না পারে।পরবর্তী সময়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের অফিসকক্ষ ও ক্লাসরুমে তালা দেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে আরেফিন সিদ্দিক 'বিরোধী' বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ডক্টর এ এস এম মাকসুদ কামাল অধ্যাপক নাদির জুনাইদ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার 'মোক্ষম' সুযোগ পেয়ে যায়।

ফলে অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি দেয় প্রশাসন। পাশাপাশি তদন্ত কমিটি গঠন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবন প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিং করে ১০ দিনের মধ্যেই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের আল্টিমেটাম দিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যান।এর মধ্যেই গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন বাংলাদেশ ইউভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) এক সাবেক শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে ঢাবি প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই তদন্তের অগ্রগতি না হওয়ায় গত ৬ মে সোমবার সকালে প্রেস ব্রিফিং করে অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তের অগ্রগতি জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে তিন দিনের আল্টিমেটাম দেন ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় তারা অভিযোগ করেন, প্রশাসন অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।একদিন পরেই ৭ মে মঙ্গলবার নাদির জুনাইদকে সব ধরনের প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদ এর সঙ্গে একই সময়ে ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌস কে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুজনকে সব প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

বিষয়টি আরও অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হয়েছে।যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলকে তদন্ত করতে দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাকসুদ কামালের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে , “আমি এই বিষয়ে কথা বলতে চাই না। আপনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করুন ।’

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে