শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অনেক দ্রুত ‘মরে যাচ্ছে’ মহাবিশ্ব!

ডাচ বিজ্ঞানীদের গবেষণার তথ্য
তথ্য-প্রযুক্তি ডেস্ক
  ১৫ মে ২০২৫, ১৬:১১
আপডেট  : ১৫ মে ২০২৫, ১৭:০৮
অনেক দ্রুত ‘মরে যাচ্ছে’ মহাবিশ্ব!
মহাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা সাদা বামন তারার দৃশ্য: ছবি সংগৃহীত

বিজ্ঞানীদের ধারণার চেয়ে অনেক দ্রুত ‘মরে যাচ্ছে’ মহাবিশ্ব– এমনই এক তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক গবেষণায়। ডাচ বিজ্ঞানীরা এই গবেষণাটি করেছেন।

গবেষণায় উঠে এসেছে, মহাবিশ্ব প্রায় ১০^৭৮ বছর পর ‘হকিং রেডিয়েশন’ নামে পরিচিত এক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেষ হয়ে যাবে, ১-এর পরে এখানে ৭৮ টি শূন্য বসবে।

1

‘ইউনিভার্স ডিকেইস ফাস্টার দেন থট, বাট স্টিল টেইকস এ লং টাইম’ শিরোনামে গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক ‘জার্নাল অফ কসমোলজি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোপার্টিকেল ফিজিক্স’- জার্নালে।

তাত্ত্বিকভাবে ‘হকিং রেডিয়েশন’ হচ্ছে, এমন এক প্রক্রিয়া, যেখানে ব্ল্যাক হোল থেকেও বিকিরণ বা রেডিয়েশন নির্গত হতে পারে। ১৯৭৪ সালে তত্ত্বটি প্রথম প্রস্তাব করেন পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং।

বিজ্ঞানীদের আগের অনুমান ছিল, এ প্রক্রিয়া ঘটতে প্রায় ১০^১১০০ বছর সময় নেবে। নতুন গবেষণায় এ ধারণা পাল্টে গিয়েছে তাদের।

বিজ্ঞানীদের বরাতে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে লিখেছে, মহাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন সাদা বামন তারা পুরোপুরি ক্ষয় হতে এ সময়টিই লাগবে। এসব তারা মহাবিশ্বের সবচেয়ে টেকসই বস্তু। তাই এগুলোই সবচেয়ে বেশি সময় ধরে টিকে থাকবে।

২০২৩ সালের গবেষণার ধারাবাহিকতায় থেকে নতুন এ গবেষণাটি করেছেন বিজ্ঞানীরা, যেখানে দেখা গিয়েছিল, কেবল ব্ল্যাক হোলই নয়, বরং অন্য বিভিন্ন বস্তুও ‘হকিং রেডিয়েশন’ নামের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ‘বাষ্পীভূত’ হতে পারে।

বিজ্ঞানীরা বোঝার চেষ্টা করেছেন, এ ঘটনা পুরোপুরি শেষ হতে ঠিক কত সময় লাগবে। নতুন এ গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক ও ব্ল্যাক হোল বিশেষজ্ঞ হেইনো ফাল্কে বলেছেন, ‘মহাবিশ্বের চূড়ান্ত সমাপ্তি আগের ধারণার চেয়ে অনেক আগেই ঘটবে। তবে সৌভাগ্যক্রমে সেটি ঘটতে এখনও অনেক সময় লাগবে।’

গবেষকরা বলছেন, একটি বস্তু পুরোপুরি বাষ্পীভূত হতে কত সময় লাগবে তা নির্ভর করে সেটি কতটা ঘন তার ওপর। যেমন– নিউট্রন তারা ও স্টেলার ব্ল্যাক হোলের ক্ষয় হতে প্রায় ১০^৬৭ বছর সময় লাগে।

এদিকে, চাঁদ বা একজন মানুষের পুরোপুরি ক্ষয় হতে প্রায় ১০^৯০ বছর লাগতে পারে। তবে গবেষকরা এটাও বলেছেন, এর আগেই অন্য কোনো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব বস্তু বিলীন হয়ে যেতে পারে।

এ পরিবর্তন মানব জীবনের জন্য কোনো হুমকি নয়। এগুলো ঘটতে এখনও অনেক সময় নেবে। তবে মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মানুষের ধারণাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে এ গবেষণার ফলাফল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে