শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ‘শাটডাউন’ ঘোষণা

দাবি আদায় না করে ঘরে ফিরব না: অধ্যাপক রইস উদ্দিন
জবি প্রতিনিধি
  ১৫ মে ২০২৫, ১৪:৩৬
আপডেট  : ১৫ মে ২০২৫, ১৬:৩৯
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ‘শাটডাউন’ ঘোষণা
শিক্ষার্থীদের চলমান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন : ছবি সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাটডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে কাকরাইলে চলমান আন্দোলনের মধ্যেই শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন এই ঘোষণা দেন।

1

এসময় অধ্যাপক রইস উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার নিয়ে এসেছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদয়ের দাবি আদায়ের জন্য এসেছি। আমাদের ওপর নির্বিচারে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অরাজকতা এবং অন্যায়। আমরা কারো বিরুদ্ধে এখানে কথা বলতে আসিনি, কোনো ষড়যন্ত্র করতে আসিনি।'

`এসেছি আমাদের অধিকার চাইতে, আমাদের দাবি আদায়ে। দাবি আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরব না। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন চলবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষা, পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে না। দাবি আদায় করে আমরা ঘরে ফিরবো।’-বলেন তিনি।

অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যদি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়. তা ভালো হবে না। আমার চোখের সামনে আমার কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।’

প্রায় ২৪ ঘণ্টা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাকরাইলে অবস্থান করছেন। অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় অনেক শিক্ষার্থী ক্লান্ত হলেও আন্দোলন থেকে সরেননি। কেউ কেউ রাতভর রাস্তায় ঘুমিয়ে আজ সকালেও সেখানে অবস্থান করছেন।

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাস ও বাস্তবায়ন, ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

এর আগে গতকাল বুধবার সকাল ১১ টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। লং মার্চটি গুলিস্তান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে এলে পৌনে একটার দিকে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।

এসময় ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানিও ছোড়া হয়। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন।

পরবর্তীতে রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বিফ্রিং করতে এলে তাকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বক্তৃতার একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে বোতল ছুড়ে মারেন একজন।

তখন উপদেষ্টা বিফ্রিং বন্ধ করে রাগ করে চলে যান। এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীরা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন। বেলা আড়াইটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাকরাইল মসজিদের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে