মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রের প্রতিভাবান অভিনেতা. নাট্যকার ও নির্দেশক রওনক হাসান। অভিনয়ের পাশাপাশি নাট্যকার ও নির্মাতা হিসেবেও সুনাম অর্জন করেছেন। বর্তমান ব্যস্ততা একাধিক সিনেমা নিয়ে। শিল্পী হিসেবে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন রওনক হাসান।
বর্তমান ব্যস্ততা...
প্রসঙ্গ নতুন সিনেমা...
‘নয়া মানুষ’ ও ‘যাপিত জীবন’ নামে নতুন দুটি সিনেমায় অভিনয় করছি। দুটি দুই ধরনের সিনেমা। এর মধ্যে ‘নয়া মানুষ’ সিনেমাটি চরের মানুষের গল্প নিয়ে নির্মাণ হচ্ছে। ভাসমান মানুষের গল্প। পাশাপাশি ‘যাপিত জীবন’ কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের উপন্যাস থেকে নির্মাণ হচ্ছে। এটা মূলত ভাষা আন্দোলনের গল্প নিয়ে সিনেমা। সিনেমায় মারুফ চরিত্রে অভিনয় করছি। আকরাম খানের ‘নকশিকাঁথার জমিন’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এ ছাড়া আরও দুটো সিনেমায় অভিনয় করছি। তবে এই মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না, কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা আছে, তবে এ বিষয়ে চমক আছে।মঞ্চে ব্যস্ততা...
সম্প্রতি মঞ্চে কাজ ঠিক ওভাবে করতে পারছি না। তবে আমার দলের ডিরেক্টর যদি ডাকেন তো আবার মঞ্চে কাজ শুরু করব।
১৯৯৪ সালে থিয়েটার আর্ট দিয়ে মঞ্চে অভিনয় শুরু করি। এরপর ১৯৯৯ সাল থেকে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের হয়ে কাজ করছি। মঞ্চে সর্বশেষ অভিনয় করেছি খালেদ খান স্মরণে, ডক্টর ইনামুল হক স্মরণে ও আলী যাকের স্মরণে নাটকে।অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতা হিসেবে...
নাট্যকার ও নির্মাতা.. অভিনয়ে ব্যস্ততা বাড়লেও মাঝেমধ্যে নাটক লিখি, পরিচালনাও করি টুকটাক। আমার লেখা প্রথম টেলিভিশন নাটকের নাম চৌকিদার। প্রথম লেখা ধারাবাহিক নাটক ‘বয়স যখন একুশ’। এটি চ্যানেল আইতে প্রচার হয়েছিল এবং বেশ সাড়া পড়েছিল। প্রথম পরিচালনা করি ‘তোমাতেই নামে’ একটি নাটক। সর্বশেষ ‘বিবাহ হবে’ নামে একটি ১০৫ পর্বের ধারাবাহিক নাটক পরিচালনা করেছি। নতুন নাটক পরিচালনার জন্য গল্প প্রস্তুত করছি।
উল্লেখযোগ্য সিনেমা তৌকীর আহমেদের ‘স্ফুলিঙ্গ’, দীপংকর দীপনের ‘অন্তর্জাল’ ও ‘অপারেশন সুন্দরবন’, আকরাম খানের ‘নকশিকাঁথার জমিন’, নূর ইমরান মিঠুর ‘পাতাল ঘর’ আর ‘নয়া মানুষ’ এবং ‘যাপিত জীবন’ এর কথা তো আগেই বলেছি।
ওটিটি প্রসঙ্গে... আসলে এখন সত্যি সত্যিই আমি চলচ্চিত্র এবং ওটিটিতে ভিন্নধর্মী কাজের প্রতি একটু বেশি মনোযোগী। নাটকের বাজেট কমতে কমতে একেবারে কমে গিয়েছিল। ওয়েব এসে আমাদের এক রকম বাঁচিয়ে দিয়েছে। সেজন্য ভালো কাজের বিষয়টি হারিয়ে ফেলেছি আমরা। সিনেমার মতো ওয়েবের শুটিং হচ্ছে। ধ্বংস প্রায় নাটকের ভয়াবহ অবস্থা থেকে আমরা আবারও ভালো চিত্রনাট্য, ভালো গল্প, ভালো অভিনয় চর্চায় ফিরতে পেরেছি। অভিনেতা হিসেবে বেঁচে গেছি। ওটিটি আসায় এখন কাজের স্কোপ বেড়েছে। তবে আমাদের মান ধরে রাখার ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে।
ক্যারিয়ারের হিসাব-নিকাশ... ২০০৬ সাল থেকে প্রতিমাসে ২০-২৫ দিন শ্যুটিং করেছি। সবসময় নিজের সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এ সময় এসে মনে হয় আমি যে ছিলাম সেই পদচিহ্নটা রেখে যেতে হবে, তাই এখন সেই পথেই ভাবছি এবং সেভাবেই ব্যতিক্রমী গল্প আর চরিত্রে কাজ করার চেষ্টা করছি। সুস্থ আছি, বেঁচে আছি- কিন্তু অভিনয় করতে পারছি না, এটা ভাবতেই পারি না। পারফর্মার ও অভিনেতার মধ্যে পার্থক্য আছে। পারফর্মার অনেক, অভিনেতা সবাই নন। বিষয়টিকে আমি এভাবেই দেখি। আমি বলতে পারি অভিনয় আমার জীবন, অভিনয় আমার সব।
যাযাদি/ এস