রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষ গান শোনার চাইতে দেখতেই চায় বেশি : পড়শী

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:০৫
মানুষ গান শোনার চাইতে দেখতেই চায় বেশি : পড়শী

সাবরিনা পড়শী- গানের ভূবনে পড়শী নামেই পরিচিত। ২০০৮ সালে চ্যানেল আইয়ের ‘ক্ষুদে গানরাজ’ নামের রিয়েলিটি শো’য়ের মাধ্যমে তার ক্যারিয়ারের শুরু। পরের বছরই ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো প্লে-ব্যাকে কণ্ঠ দেন। সেই থেকে এই ক্ষুদে গানরাজের এগিয়ে চলা। তবে হালে তিনি আলোচনায় কম। এ নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন....

গানের ব্যস্ততা কেমন যাচ্ছে এখন? এতদিন তো ব্যস্ততা ছিলই না বলতে গেলে। নির্বাচনের পরিস্থিতির কারণে স্টেজ শো বন্ধই ছিল। এখন যেহেতু ভালোয় ভালোয় নির্বাচনটা শেষ হয়েছে আশা করছি আবার শিগগিরই ব্যস্ততায় ফিরব। তবে আমি গানের জন্য কখনোই তাড়াহুড়া করি না।

বিশেষ দিবসগুলোতেও কম দেখা যায় আপনাকে?

আমি সরকারি পর্যায়ে হওয়া বিশেষ দিবসের গানে সাধারণতা থাকি না। এতে আমি সাচ্ছন্দবোধ করি না। এ ধরনের গানের ক্ষেত্রে টিভি লাইভ শো’ও একটু এভয়েড করি। ভার্চুয়াল আনন্দ দিতে নয় বরং সামনাসামনি দর্শক-শ্রোতার সামনে অনুষ্ঠিত কনসার্টগুলোই বেশি উপভোগ করি। তখন যদি ওই বিশেষ দিবসের গান থাকে তাহলে করি।

এর কারণ কি?

সরকারিভাবে কোরাস বা দলীয়গানে যেসব মিউজিশিয়ান থাকেন সেটা তাদেরই পছন্দের কমন সেটআপ। আর আমি যে সেটআপ মেইনটেন করি তার বাইরে গাই না। কারণ তাতে আমার নিজস্বতা প্রকাশের সুযোগ থাকে। যেটা অন্য কারও নেতৃত্ব দেওয়া দলীয় গানে সেটা সম্ভব নয়।

মিউজিক ভিডিওতে যেসব দলীয় প্রদর্শনী হয়? মিউজিক ভিডিওর বিষয়েও আমি খুব চ্যুজি। হুট করে কিছু করি না। এখানেও সার্বিকভাবে আমার ইনভল্বমেন্ট থাকতে হবে। আমার টিউন, রিলিক, মিউজিক পছন্দ হতে হবে। ঐভাবে চিন্তাভাবনা করেই আমার মিউজিক ভিডিও করি। সেজন্যই আমি র‌্যানডম কিছু করি না। সেজন্যই সলো ছাড়া আমার কোনো মিক্সড অ্যালবাম হয়নি। এই পছন্দের ব্যাপার থাকাতেই মিউজিক ভিডিও আমার বছরে একটি কি দু’টির বেশি হয়নি। সব মিলিয়েই আমি আমার পছন্দের সেটআপের বাইরে যাই না।

আগে দেখা গেছে সলো গানেই শিল্পীরা বেশি জনপ্রিয় হয়েছেন? আগে ছিল সরকারি প্ল্যাটফরমসহ মাত্র দু’চারটি প্ল্যাটফরম। মুভিই ছিল প্রধান। দেশের মানুষ মুভির গানই শুনত বেশি। আগের শিল্পীরাও মুভিতে বেশি গান করতেন। সেই মুভির গানগুলো নিয়েই অ্যালবাম হতো। বেতারে, টিভিতে প্রকাশ পেত। যারা মুভিতে গান করতেন এভাবে তাদের গানই বেশি সম্প্রসারিত হতো। আগে শিল্পীরা বছরে দু’তিনটি গান করতেন। আজকের মতো মিউজিক ভিডিও নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না। মুভির গানগুলোই অসংখ্য অ্যালবামের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের মাঝে ছড়িয়ে যেত। এভাবে তাদের জনপ্রিয়তাও সম্প্রসারিত হতো।

এখন তো ইউটিউবের কারণে দেশের অসংখ্য গানের শিল্পী? আসলে আগে মুভির বাইরে শিল্পীদের খুব কম গানের অ্যালবাম হতো। এখন অসংখ্য প্ল্যাটফরম। সব প্ল্যাটফর্মেই র‌্যানডম গান গাইতে হচ্ছে। মানুষ গান শুনছে অসংখ্য মাধ্যমে। আগের মতো দু’একটি মাধ্যমে নয়। সে কারণেও আগের শিল্পীদের মতো এখনকার শিল্পীরা শ্রোতাদের মাঝে খুব বেশি সম্প্রসারিত হতে পারছেন না। আর এখন মুভিও অনেক কমে গেছে। মানুষ এখন গান শোনার চাইতে গানটাই দেখতে চায় বেশি। এটা যেনতেনভাবে হলেও হবে না। দর্শক এখন অনেক ব্রিলিয়ান্ট। ভিডিওটা তাদের কাছে অনেক আকর্ষণীয় ও প্রতিযোগিতামূলক হতে হবে। মানুষ এখন গানের গুণবিচারীর চাইতে দর্শনবিচারীই বেশি।

এতে কি গানের গুণগত মান বাড়ছে নাকি কমছে?

ঠিক ধরেছেন। সেজন্যই আমি এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে কোয়ান্টিটির চাইতে কোয়ালিটিকেই বেশি গুরুত্ব দিই। তারপরও যদি এটা মানুষ না নেয়, মানুষের মাঝে সম্প্রসারিত না হয়- তাতে তো আমার হাত থাকার কথা নয়। এক্ষেত্রে আমি ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল।

অনেকে বলছেন এখনকার গানে মেলোডি প্রায় নেই?

এটাও শতভাগ ঠিক নয়। এখনো মেলোডিয়াস গান হচ্ছে। তবে মানুষ সব সময়েই একটা কনফিউজিং প্রাণী। কোন মুডে কোন গান তার পছন্দ নিজেও জানে না। আজকে যে গানটি ভালো লাগছে কালকেই বলবে, ‘ধুর এইটা কোনো গান হলো?’ যখন মন তার মেলোডি শুনতে চাইবে অন্য গান বাজালে পছন্দ করবে না। যখন পপ বা রক পছন্দ মেলোডি পছন্দ করবে না। শ্রোতাদের এখন একেক মুডে একেক গান পছন্দ হচ্ছে। ফলে শিল্পীদের এখন টিকে থাকতেই সংগ্রাম করতে হচ্ছে বেশি। গান শোনার এই মুড সিলেকশনের ক্ষেত্রে আমি বলব, তারপরও এখনকার প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমাদের গান ভালো হচ্ছে। ভালো হচ্ছে বলেই এখনকার ইন্ডাস্ট্রিও আগের চাইতে অনেক বেশি সম্প্রসারিত হচ্ছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে