শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
ওকালতি কচড়া

ফৌজদারি মামলায় খোলা মনে জেরা

অ্যাডভোকেট এস এম তাসমিরুল ইসলাম উদয়
  ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

একটি অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন সেশন্স আদালতে জেরার জন্য টিমমেট সমেত উপস্থিত হয়েছি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মাদক বিক্রয়ের অভিযোগ। প্রস্তুতি সিরিয়াস কারণ মোয়াক্কেল দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন অথবা মৃতু্যদন্ড হবে!

পুলিশ সাক্ষীকে দুটো প্রশ্ন করা মাত্রই বিজ্ঞ বিচারক বিগড়ে বসলেন। অভিযোগ করলেন আমি সাক্ষীকে মিস লিডিং প্রশ্ন করছি! অথচ জেরায় প্রশ্নের মাঠ খোলা। যেদিক দিয়ে ইচ্ছা আমি প্রশ্নের বাণ ছুড়তে পারি। আমি তর্কিত ঘটনাস্থল থেকে যতদূরে যেতে চাইছি তিনি আমাকে ঘটনাস্থলে এনে বেঁধে রাখতে চাচ্ছেন। এ যেন সাজার ইজারাদারের মুখোমুখি হয়েছি!

আধা ঘণ্টার জেরায় কমপক্ষে ২০ বার বাধার সম্মুখীন হয়ে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হওয়ার দশা। অবশেষে তর্কিত আলামতের ওজন, ট্যাগিং, প্যাকেজিং ও সাক্ষীদের স্বাক্ষর কার্যক্রমকে থানার ভেতরে ঢুকাতে সক্ষম হওয়ায় খানিক আশার আলো দেখতে পেয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচার অবস্থা!

আমার মোয়াক্কেল দোষী না নির্দোষ তা আদালতেই প্রমাণিত হবে। কোনো আদালত যদি নিরপেক্ষ মনে কন্ট্রাডিকশনগুলো সামনে এনে বিচার করতে সমর্থ না হোন তবে উপরের আদালতে ফল পাওয়া যায়।

কিন্তু এক পাক্ষিক প্রি-সেটেড মাইন্ড নিয়ে যারা বিচার করতে বসেন তারা স্রেফ সরকারি চাকরি করেন, বিচার করতে বসেন না। কনভিকশন রেট বাড়িয়ে যারা মাদক নির্মূলের স্বপ্ন দেখেন তাদের আইন ও নৈতিকতার জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সময় হয়েছে।

আমি মনে করি, এ দেশের শতকরা ৭০% মাদক মামলার অভিযোগ মিথ্যা, কল্পিত ও হয়রানিমূলক। অনেকের মনে প্রশ্ন তৈরি হবে, তবে মৃতু্যদন্ড দেয়ার মতো মাদক কি পুলিশ পকেটে পুরে হাঁটছিল? উত্তরে যদি বলি, অনেকটা তাই!

মাদক এবং অস্ত্রের বাজার ও সিন্ডিকেট গেইম এ দেশের সাধারণ মানুষের বোধগম্যতার বাইরে। প্রচুর মামলা হবে। উদ্ধার দেখাতে হবে কেজি-কেজি কিন্তু আড়ালে পার হয়ে যাবে টনে-টন।

অ্যাডভোকেট এস এম তাসমিরুল ইসলাম উদয়, তরুণ আইনজীবী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে