বিগত ২৯ মে ২০২৫, বৃহষ্পতিবার, সন্ধ্যায় তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড. কেমাল মেমিসওলো’র সাথে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আমানুল হক-এর একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তুরস্ক কর্তৃক পূর্বে প্রস্তাবিত বাংলাদেশে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ বিষয়টি উত্থাপন করেন।
জানা যায় যে, গত বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই এই হাসপাতালটি নির্মাণ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল।
কিন্তু বাংলাদেশ সরকার পর্যাপ্ত জায়গা বরাদ্দ না করায় হাসপাতালটি আলোর মুখ দেখেনি।
বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সাম্প্রতিক তুরস্ক ভ্রমণকালীন, বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের জায়গা বরাদ্দ বিষয়ক সমস্যাটি তুলে ধরলে, তিনি নিশ্চয়তা প্রদান করেন যে, জায়গা বরাদ্দ নিয়ে কোন সমস্যা হবে না।
সরকার এ বিষয়ে আন্তরিক। সে পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পুনরায় বিষয়টিতে জোর প্রদান করেন এবং তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে জানান যে, শীঘ্রই একটি কমিটি গঠন করে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, তুরস্ক কর্তৃক হাসপাতালটি নির্মিত হলে- সেটি যেন বাংলাদেশিদের তত্ত্বাবধানেই পরিপূর্ণভাবে পরিচালিত হতে পারে এমনভাবে প্রশিক্ষিত করে তোলা হবে।
এছাড়াও তিনি জানান যে, এটির নির্মাণ হবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে বড় পরিবর্তন এবং জটিল রোগীদের তখন বিদেশমুখী হতে হবে না।
উক্ত বৈঠকে, রাষ্ট্রদূত জুলাই অভ্যুত্থানে আহত সাতজন বাংলাদেশিদের তুরস্কে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তুরস্ক সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
এছাড়াও তিনি প্রস্তাব করেন যে, তুরস্ক প্রদত্ত বিশেষ সুবিধার আওতায় সম্ভব হলে আরও আহত বাংলাদেশিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য তুরস্কে আনার সুযোগ দিতে।
এর প্রতিউত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহত রোগীদের মধ্যে যাদের উন্নত চিকিৎসায় সুস্থ করা সম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়, তাদের একটি তালিকা প্রদান করতে অনুরোধ করেন।
বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে বাংলাদেশি চিকিৎসক এবং নার্সদের তুরস্কে প্রশিক্ষণ প্রদান, জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা কার্যক্রমে সহায়তা প্রদানে তুরস্ক হতে একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদল প্রেরণ এবং অভ্যুত্থানে যারা অঙ্গ হারিয়েছেন তাদের কৃত্রিম অঙ্গ স্থাপনে সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
উভয় দেশের কল্যাণে স্বাস্থ্য খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য পারস্পরিক স্বদিচ্ছা এবং যৌথ প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে বৈঠকটি শেষ হয়।